অনুমানভিত্তিক অভিযোগ এনে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে হেয়-প্রতিপন্ন করার প্রবণতা থেকে টিআইবিসহ অন্যদের সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে জনহয়রানির নয়, জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দৃশ্যমান অনেক পরিবর্তন হয়েছে যা এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমেও এসেছে। মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তরগুলোর যেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি সেখানেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছি যেন কোনোভাবেই ন্যূনতম দুর্নীতি না থাকে।’

আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লিখিত বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গণপূর্তমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন রাজউকের বিরুদ্ধে টিআইবি কর্তৃক আনীত অভিযোগের তথ্য কোনোভাবে সত্য নয়। এর কোনো ভিত্তি নেই এবং এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জনবান্ধব একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে কারো দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হেয়-প্রতিপন্ন করে আলাদা বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা। আমি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে বিশেষ কোনো প্রকল্পের অনুমোদনই হয়নি। সুতরাং এ সংক্রান্ত ঘুষ দেওয়ার তথ্য সঠিক নয়।’

নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনীতির প্রভাব সংক্রান্ত টিআইবির অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মন্ত্রী হওয়ার পর রাজউকে কোনো নিয়োগ হয়নি। শুধু আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। টিআইবি বলেছে, ফ্ল্যাটের চাবি প্রদানের ক্ষেত্রে টাকা দিতে হয়। উত্তরায় ফ্ল্যাট বরাদ্দ অনলাইন পদ্ধতিতে করে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে ওইদিনই তাদের চাবি দেওয়া হয়েছে। শুধু সেদিন অনুপস্থিত ব্যক্তিরাই পরবর্তী সময়ে চাবি নিয়েছেন।’

ভূমির ছাড়পত্র, আমমোক্তারনামার ক্ষেত্রে টাকা প্রদানের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রাজউকে নির্ধারিত আইন করে দিয়েছি, নির্ধারিত সময়ের ভেতরে সেবা প্রদান করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা অটোমেশন চালু করেছি। এ ক্ষেত্রে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আসার যৌক্তিকতাই নেই।’

গণপূর্তমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। আমরা সেটাকে কঠোরভাবে ধারণ করেছি। যেসব দুর্নীতির অভিযোগ ছিল তার অধিকাংশ আমরা বিনাশ করেছি এবং আগামীতেও করতে চাই। টিআইবিসহ অন্যদের বলব, শুধু অভিযোগ উত্থাপন নয়, সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট তথ্য দিন। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। গণপূর্তমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ৯২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, যা দেশের ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত।’