অনলাইনে পণ্যের অগ্রিম টাকা দিয়ে প্রতারিত ক্রেতা
‘চারটি ড্রেস মাত্র এক হাজার ২০০ টাকা’ অনলাইনে পণ্যের এমন ‘ধামাকা অফার’ দিয়ে ক্রেতার কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে ক্রেতার আইডি ব্লক করে দিত ‘ফ্যাশন হাউজ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ। টাকা পরিশোধ করার পর ব্লক খেয়ে সামিরা নামের এক নারী এই বিষয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) অভিযোগ করেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নেমে ‘ফ্যাশন হাউজ’ পেজের স্বত্বাধিকারী ওসমান গনি (২৫) ও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার স্বর্ণাকে খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। গতকাল সোমবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন সিআইডির সাইবার পুলিশ বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান।
মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ওই পেজ থেকে কম দামে নারীদের আকর্ষণীয় পোশাক বিক্রির কথা বলে পোস্ট দেওয়া হতো। তারপর কিনতে চেয়ে যোগাযোগ করলে শর্তানুযায়ী অগ্রিম টাকা চাওয়া হতো। এরপর ক্রেতার আইডি ব্লক দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো। সামিরা নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তিনি এক হাজার ২০০ টাকায় চারটি পোশাকের বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করেন। পরে তিনি ইনবক্সে যোগাযোগ করলে তাঁকে অগ্রিম টাকা দিতে বলা হয়। সেসময় তিনি মোট আটটি পোশাকের অর্ডার দেন দুই হাজার ৪০০ টাকায়। কিন্তু তিনি আর পণ্য বুঝে পাননি। বরং তাঁকে পেজ থেকে ব্লক দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি সিআইডিতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।’
মো. কামরুজ্জামান আরো বলেন, ‘শুধু সামিরা নয়, এমন অনেকেই আমাদের কাছে ওই পেজের ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছিল। সেজন্য আমরা অভিযান চালিয়ে তাঁদের গতকাল গ্রেপ্তার করেছি। সেসময় তাঁদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত চারটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৬টি সিম উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, এখন পর্যন্ত কোনো অর্ডারকারীকেই তারা পণ্য দেয়নি। তার মানে, যারা অর্ডার করেছে সবাই প্রতারণার শিকার হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী মিলে গড়ে তুলেছিল প্রতারণার বাজার। তারা এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। স্বামী-স্ত্রী দুজনই বড় ধরনের বাটপার।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘ফেসবুকে এ রকম আরো অনেক ভুয়া পেজ আছে, যারা একই পদ্ধতিতে অসংখ্য কাস্টমারের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ রকম অপরিচিত ভুঁইফোড় পেজ থেকে অ্যাডভান্স টাকা প্রদানের মাধ্যমে কেনাকাটা করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো। আমাদের কাছে এ রকম আরো কিছু পেজ নিয়ে অভিযোগ জমা হয়েছে। আমরা সেগুলোকে মনিটরিং করছি। আর এভাবে সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হলে সিআইডিকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’