৭ মার্চের ভাষণই স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষণা : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণই স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষণা; ওই ভাষণে ছিল মুক্তিযুদ্ধের দিক-নির্দেশনা ও রণকৌশল।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন উপলক্ষে আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল বাস্তবমুখী।
শেখ হাসিনা বলেন, ঐতিহাসিক ওই ভাষণ এক সময় নিষিদ্ধ ছিল। অথচ এখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ওই ভাষণ জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে, যা অনুবাদ করা হয়েছে পৃথিবীর প্রায় সব ভাষায়।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে অথনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি (বঙ্গবন্ধু) সব ধরনের যুদ্ধ প্রস্তুতির নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, একটি গেরিলা যুদ্ধ হলে কী কী করতে হবে। তিনি জানতেন, যে কোনো মুহূর্তে তিনি এই যুদ্ধের ঘোষণা অফিসিয়ালি দেবেন, তখন তিনি বেঁচে নাও থাকতে পারেন। সে জন্য তাঁর এই ঐতিহাসিক ভাষণেই তিনি স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষণা দিয়ে গেলেন। তিনি বলে গেলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় পূর্ব বাংলার মানুষের অবদান ছিল, পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষের তেমন কোনো অবদান ছিল না। কিন্তু পাকিস্তানের শাসকরা যখন এই বাঙালির ওপর শোষণ-বঞ্চনা শুরু করল, অত্যাচার শুরু করল, সংস্কৃতির ওপর আঘাত দিল, অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে চাইল, এবং আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার কেড়ে নিতে চাইল, তখন পাকিস্তানের সেই শাসকদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু তাঁর সংগ্রাম শুরু করে ১৯৪৮ সাল থেকে। সেই ৪৮ পেরিয়ে প্রতিটি ধাপে ধাপে তিনি সংগ্রাম করেছেন বাঙালিদের স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে যেন প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
‘৬৬-এর ছয় দফা এত অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে তা কেউ কল্পনাই করতে পারেনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সেটাও সম্ভব হয়েছে। এবং তারই ভিত্তিতে ৭০-এর নির্বাচনে বিজয়। সেই বিজয়ের পরেও বাঙালিকে ক্ষমতা দিতে চায়নি। যার ফলে আন্দোলন, সংগ্রাম ও অসহযোগ আন্দোলন। এবং এই আন্দোলনের পথ ধরে তিনি বাঙালিকে একটি সশস্ত্র বিপ্লবের দিকে এগিয়ে নিয়েছেন। পৃথিবীতে এমন কম নেতাই এভাবে তাঁর জীবনে সাফল্য অর্জন করেছেন, এমন দৃষ্টান্ত আমরা কমই দেখাতে পারি।’ বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।