১৮ যুক্তি দিয়ে যুদ্ধাপরাধী কায়সারের রিভিউ
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী হবিগঞ্জের জাতীয় পার্টি (জাপা) নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার ১৮টি যুক্তি দিয়ে সাজার রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) করতে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন। রিভিউ আবেদনে মৃত্যুদণ্ডের সাজা বাতিল চাওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিভিউ আবেদন দাখিল করেন সৈয়দ কায়সারের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমীন।
গত ২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে সৈয়দ কায়সারের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়। ওই দিনই কারাগারে তাঁকে এ পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। এ অবস্থায় রিভিউ আবেদন দাখিল করা হলো।
ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমীন বলেন, সৈয়দ কায়সারকে খালাস দেওয়ার জন্য ১১৯ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ১৮টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর এক রায়ে কায়সারকে সাতটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন কায়সার। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি রায় দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ধর্ষণসহ তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। গত ২১ অক্টোবর এর পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পায় ট্রাইব্যুনাল। এর পরের দিন মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়।
সৈয়দ কায়সারকে সাতটি অভিযোগে (৩, ৫, ৬, ৮, ১০, ১২ ও ১৬ নম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগ তিনটিতে (৫, ১২ ও ১৬ নম্বর) মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। তিনটিতে (৬, ৮ ও ১০ নম্বর) সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একটিতে (৩ নম্বর) খালাস দেন আপিল বিভাগ।
যে তিন অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল
অভিযোগ নম্বর ৫ : হবিগঞ্জ সদরের শায়েস্তাগঞ্জ খাদ্যগুদাম এবং শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজারের রেলসেতু এলাকা থেকে ২৯ এপ্রিল আবদুল আজিজ, আবদুল খালেক, রেজাউল করিম, আবদুর রহমান এবং বড়বহুলা এলাকার আবদুল আলী ওরফে গ্যাদা, লেঞ্জাপাড়া এলাকার মাজত আলী ও তারা মিয়া চৌধুরীকে ধরে নিয়ে একমাস আটক রেখে নির্যাতনের পর গোয়াইন নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা ও নদীতে লাশ ফেলে দেওয়া।
অভিযোগ নম্বর ১২ : আগস্ট মাসের মাঝামাঝি কোনো একদিন হবিগঞ্জের মাধবপুর থানার বেলাঘর ও জগদীশপুর হাইস্কুল থেকে এক নারীকে অপহরণ করে পাকিস্তান বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া ও ধর্ষণে সহযোগিতা করা (এই ধর্ষিতার জন্ম দেওয়া যুদ্ধ শিশু ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছে)।
অভিযোগ নম্বর ১৬ : নাসিরনগরের ২২টি গ্রামে ১৫ নভেম্বর তাণ্ডব চালিয়ে ১০৮ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়।