স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলেন মির্জা ফখরুল
রিজেন্ট হাসপাতালের অনুমোদনের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রোববার রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আজকের পত্রিকাতে আছে যে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মধ্যে এখন আপনার যুদ্ধ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আমি তো রিজেন্ট হাসপাতালকে অনুমোদন দিতাম না, আমাকে যদি মন্ত্রণালয় থেকে না বলা হতো। অর্থাৎ মিনিস্ট্রি থেকে বলা হয়েছে যে রিজেন্ট হাসপাতালকে অনুমতি দাও তারা পরীক্ষা করবে। তাহলে কে রেসপনসেবল? দি হেলথ মিনিস্টার হিমসেলফ সুড রিজাইন ইমিডিয়েটলি অ্যান্ড হি সুড বি ব্রট ইন দি ট্রায়াল হোয়াই টু দি গিভ ইট।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে দুঃখ হয়, লজ্জা হয়, যখন দেখি প্রচণ্ড দুঃসময়ের মধ্যে করোনা টেস্ট করতে গিয়ে দুর্নীতি এবং তার সঙ্গে জড়িত কে? আওয়ামী লীগের সদস্য আওয়ামী লীগ। আজকে গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলেছে, ভঙ্গুর হয়ে গেছে। যে হারে লুটপাট করেছে আপনারা সবাই দেখেছেন, গণমাধ্যম দেখে।
আমি গণমাধ্যমের যারা কর্মী ও সাংবাদিক আছেন তাদের ধন্যবাদ জানাতে দিতে চাই যে, এই চরম বৈরিতার মধ্যেও যখন কোনো সংবাদ প্রকাশ করা বিপজ্জনক তখন তারা অনেকটা প্রকাশ করছেন যেগুলো জনগণ জানতে পারছে- এই সরকারের আমলে, আওয়ামী লীগ আমলে কীভাবে দুর্নীতি ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর হচ্ছে।’
করোনা মোকাবিলায় বিএনপির দেওয়া দীর্ঘ-মধ্য-স্বল্পমেয়াদি প্রণোদনা প্রস্তাবনায় সরকার সাড়া না দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব। বলেন, ‘ফলে আমরা কী দেখেছি? আমরা দেখেছি যে, প্রথম দিকে মানুষ এমনভাবে যারা দিন আনে দিন খায় তারা কষ্ট করছে, এখন তো কষ্ট আরো বেড়ে গেছে। একদিকে সব খুলে দেওয়ার পরে সংক্রমণ বেড়েছে, মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।’
পরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের স্বাস্থ্যসেবার কল সেন্টার ০৯৬৭৮১০২১০২ নম্বরে ফোন করে এই কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।
সরকারের দমন নীতির কঠোর সমালোচনা করে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে যারা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে চান তারা শিকার হচ্ছেন গুমের, তারা শিকার হচ্ছেন মিথ্যা মামলার, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পলি নামে একজন কিশোরী মেয়ে তার ফেসবুকে স্বাধীন মত প্রকাশ করার কারণে রাতের বেলা তাকে গ্রেপ্তার করে এখনো আটকিয়ে রেখেছেন। ছাত্রদলের সাবেক নেতা টিটো হায়দার চার-পাঁচ দিন হলো গায়েব। নোয়াখালীর নেতারা বার বার বলছেন, সেখানে র্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করছেন। কখনো তারা আকার ইঙ্গিতে বলে আছে, আবার কখনো বলে আমরা কিছুই জানি না।’
রিজভী বলেন, ‘সুস্পষ্টভাবে সবাই দেখছে যে, টিটো বেগমগঞ্জ থানায় আছে। অনেকই দেখেছেন। কিন্তু পুলিশ বলছে যে, সে তাদের কাছে নেই। আমরা সবাই জানি টিটো পুলিশের কাস্টডিউতে আছে এখন। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভয় পাইয়ে দেওয়া যে, আর কেউ করোনা নিয়ে তোমরা কথা বলো না। কী হচ্ছে না হচ্ছে, কত জিকেজি, রিজেন্টের ঘটনা হবে-খবরদার এসব নিয়ে কথা বলতে পারবে না, সরকারের কোনো অনাচার নিয়ে কথা বলতে পারবে না। মানুষকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।’