সিরাজগঞ্জে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী হত্যার রহস্য উদঘাটন
ডাকাতের অবস্থান শনাক্ত করে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদ (৩৮) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে পিবিআই জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
মামলা তদন্ত করতে গিয়ে আন্তজেলা ডাকাতদলের সন্ধান মিলেছে বলেও জানিয়েছে পিবিআই। যারা দীর্ঘদিন ধরে পাবনা, নাটোর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে রেজাউল করিম বলেন, ‘২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে সলঙ্গা থানার পাটধারী এলাকায় মহাসড়কের পাশ থেকে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ সময় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শামসুল হক (৪০) নামে আরও এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। নিহত নূর মোহাম্মদ নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার ঠাকুর লক্ষ্মীকোল গ্রামের মো. তমিজ মণ্ডলের ছেলে এবং আহত শামসুল হক একই গ্রামের হাফিজ আলী সরদারের ছেলে।
এ ঘটনায় নূর মোহাম্মদের ছোট ভগ্নিপতি জাকির হোসেন বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। ১০ দিন পর পিবিআই মামলাটি গ্রহণ করার পর সন্দেহভাজন আসামি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শামসুল হককে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কোনো তথ্য উদঘাটন করতে না পেরে ছয়-সাত মাস মামলাটির তদন্ত কাজ স্থগিত করা হয়। এরপর আশপাশের জেলাগুলোতে ঘটে যাওয়া একই ধরনের কয়েকটি ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়। সব ঘটনায় পাট, মহিষ, পেঁয়াজ, রসুন, নগদ টাকা, মোবাইল ছিনতাই এবং ডাকাতির মতো তথ্য পাওয়া যায়। আর অপরাধীরা ছিনতাই করা মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহার করে এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে। এ অবস্থায় পিবিআই টিম আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে একপর্যায়ে অপরাধীচক্রকে শনাক্ত করে।
পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার সময় নিহত নূর মোহাম্মদ যে স্থানে পেঁয়াজ লোড করেছিলেন সেখানেই ইছার উদ্দিন ওরফে ইছার (৪৮) নামে একজন দুর্ধর্ষ ডাকাতের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এর পরই তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য সন্ধান চালায় পিবিআই। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, ইছার উদ্দিন ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার একটি ডাকাতি মামলায় কারাগারে আটক আছেন।
চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি আইনি প্রক্রিয়ায় ইছার উদ্দিনকে কুমিল্লা কারাগার থেকে এনে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইছার উদ্দিন নূর মোহাম্মদ খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করেন এবং এর সঙ্গে আরও পাঁচজন জড়িত আছে বলে জানান। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় খুন ও ডাকাতিসহ অন্তত ১৫-১৬টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘ইছার উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’