সাঁথিয়ায় ভিজিডি কার্ডধারীদের জমাকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় ২৩৫ জন ভিজিডি কার্ডধারীর সঞ্চয়ের অংশ তিন লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। আর-আতাইকুলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগে উঠেছে।
অভিযোগে জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলার আর-আতাইকুলা ইউনিয়নের দুস্থ-অসহায় ২৩৫ জন কার্ডধারী রয়েছে। তাঁরা ভিজিডির ৩০ কেজি চাল গ্রহণকালে প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে দুই বছর জমা রাখেন ইউনিয়ন পরিষদ ও মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরে। দুই বছর শেষ হলে ওই টাকা মহিলাবিষয়ক দপ্তর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেওয়া হয়। বিধি মোতাবেক দুই বছর পর ভিজিডি কার্ডধারীদের প্রত্যেকের চার হাজার ৮০০ টাকা জমা হওয়ার কথা থাকলেও করোনাকালীন কারও কারও এক-দুই মাস সঞ্চয় দেওয়া বাদ পড়ায় মূল সঞ্চয় ২০০ থেকে ৪০০ টাকা কম হয়। তাদের সেই সঞ্চয়ের সব টাকা প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর জানুয়ারিতে কার্ডধারীদের দিয়ে দেওয়ার সরকারি নির্দেশ থাকলেও চেয়ারম্যান তা দেননি। পরে এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে চেয়ারম্যান সবাইকে মোট তিন হাজার টাকা করে দিয়ে বাকি টাকা পরে দেবেন বলে বই রেখে দেন।
সূত্র জানায়, শুধু টাকা পরিশোধ হলেই বই রেখে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এখানে টাকা পরিশোধ না করেই তাদের সবাইকে তিন হাজার টাকা করে দিয়ে বই রেখে দিয়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
২ নম্বর ওয়ার্ডের ভিজিডি কার্ডধারী মাজেদা খাতুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার বইয়ে চার হাজার ২০০ টাকা জমা দিয়েছি। আমাকে প্রথমে এক হাজার টাকা দেওয়া হয়। পরে দুই হাজার টাকা দিয়ে কিছু না বলে বই রেখে দেয়।
আর-আতাইকুলা ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ রতন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার স্ত্রীর নামে একটি ভিজিডি কার্ড আছে। তাকেও তিন হাজার টাকা দিয়েছে।’ কার্ডধারী বানেছা বেগম ও একই কথা জানান।
এ বিষয়ে আর-আতাইকুলা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রফিকুল ইসলাম কার্ডধারীদের জমাকৃত অর্থ সম্পূর্ণ দেওয়া হয়নি বলে স্বীকার করেন।
সাঁথিয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আলমগীর কবীর জানান, কার্ডধারীদের পাঁচ মাসের টাকা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। শুনেছি তাদের জমাকৃত কিছু টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন।
আর-আতাইকুলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটা একটা ষড়যন্ত্র। এখন যারা ষড়যন্ত্র করছে, এর আগেও তারা আমাকে অপসারণের দাবিতে লিখিতভাবে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেছিল।’
এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহমেদ বলেন, ‘ভিজিডি কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের একটি টাকাও কম দেওয়ার সুযোগ নেই। চেয়ারম্যান সাহেব টাকা ভেঙে থাকলে তা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’