সহস্রাধিক তরুণী পাচার, চক্রের ৮ সদস্য গ্রেপ্তার
বিদেশে ড্যান্সবারে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নারী পাচারের অভিযোগে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর, কেরাণীগঞ্জ ও মুগদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই তরুণীকে উদ্ধার ও আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব-১১ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন রাজধানীর কাকরাইল এলাকার ধানসিঁড়ি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক শাহাবুদ্দিন, নারায়ণগঞ্জের একটি নাচের প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মালিক রিজভী হোসেন অপু, পাচারকারী চক্রের এজেন্ট হৃদয় আহম্মেদ কুদ্দুস, মামুন, স্বপন হোসেন, শিপন, মুসা ও নারী সদস্য শিল্পী আক্তার।
র্যাব জানায়, এর আগে নারী পাচারকারী চক্রের ছয়জন র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে অন্য সদস্যরা পাচারের কৌশল পরিবর্তন করে ফেলে। সরাসরি দুবাই ও মালয়েশিয়ায় পাচার না করে ভারতসহ আরো কয়েকটি দেশকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন পোশাক কারখানার নিম্নবিত্ত সুন্দরী নারী শ্রমিক, তালাকপ্রাপ্ত ও পারিবারিক সমস্যার শিকার তরুণীদের টার্গেট করে। এরপর তাদের নাচ শিখিয়ে বিদেশে ড্যান্সবারে উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার নামে ফাঁদে ফেলে পাচার করে। এই পাচারের মূল হোতারা হচ্ছেন বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির মালিক। তাদের সহায়তা করে থাকেন দেশের বিভিন্ন নাচের প্রশিক্ষণকেন্দ্র ড্যান্স ক্লাবের মালিক ও প্রশিক্ষকরা।
গত দেড় বছরে এই চক্রটি ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের সহস্রাধিক তরুণীকে বিদেশে পাচার করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিতে বিষয়টি ধরা পড়লে পাচারকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে নারীদের অনেক পাসপোর্ট, ভিসার ফটোকপি ও নথিপত্রসহ পাচারের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রত্যেকেই আগের মামলার পলাতক আসামি। তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো এলাকা থেকে ড্যান্সবারে নারী পাচারকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারসহ পাচারের শিকার চার তরুণীকে উদ্ধার করে র্যাব।