সরকারের স্বার্থেই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া উচিত : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি গুরুতর অসুস্থ, যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সরকারের স্বার্থেই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া উচিত।’
জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার চন্দ্রিমা উদ্যানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তাঁর শরীরের যে অবস্থা, তাতে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সে জন্য আমরা বলেছি যে, সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে তাঁকে ধীরে ধীরে কারাগারের মধ্যে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অবিলম্বে তাদেরই স্বার্থে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া উচিত। কারণ, এ দেশে গণতন্ত্রকে যদি সত্যিকার অর্থেই প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, তাহলে খালেদা জিয়া ছাড়া সেটা সম্ভব হবে না।’
আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে প্যারোলে আবেদনের কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির আবেদন সম্পূর্ণ তাঁর পরিবারের ব্যাপার। এ বিষয়ে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। কবর জিয়ারত করেছি। পুষ্পস্তবক অর্পণ করে আমরা শপথ নিয়েছি যে, গণতন্ত্রের মাতা ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমাদের সংগ্রামকে অব্যাহত রাখব। একই সঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের সংগ্রামকে আরো বেগবান করব।’
দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়ে বিএনপি কী করছে এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এবং আমাদের সংবিধান অনুযায়ী, তিনি জামিনযোগ্য। তিনি জামিন পেতে পারেন এবং পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এ সরকার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে জামিন না দিয়ে আটক করে রেখেছে। আমরা এর জন্য আন্দোলন করছি। দুই বছর ধরেই আমরা আন্দোলনের মধ্যে আছি।’
খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকার বাধ্য হবে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া, সেই মুক্তি দিতে সরকার বাধ্য হবে। অবশ্যই জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তারা এগিয়ে আসবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো আমাদের দল থেকে আজ পর্যন্ত কোনো প্যারোল নিয়ে কথা বলিনি, বলেছি কি? তো এটা নিয়ে কথা বলা কতটা সঠিক হয়েছে, সেটা তিনি (ওবায়দুল কাদের) বিবেচনা করবেন।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও খায়রুল কবির খোকন, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদসহ দলের নেতাকর্মীরা।