রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় তিন বছরের এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক কিশোরকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। গত ২১ আগস্ট উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পরের দিন ২২ আগস্ট দিন ওই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার করে।

মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে খেলাধুলার সময় প্রতিবেশী এক ব্যক্তির তিন বছর বয়সী শিশুকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টার অভিযোগ তোলা হয় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া অপর এক কিশোরের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি ও তার স্বজনরা। ভয়ে ওই কিশোর পাশের গ্রামে তার বোনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি ও তার লোকজনেরা ছেলেটিকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে। শ্লীলতাহানীর চেষ্টার অভিযোগ এনে তাকে প্রথমে দড়ি দিয়ে হাত-পা বাঁধা হয়। পরে দীর্ঘ সময় ধরে তাকে লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করা হয়। এরপর ধর্ষণচেষ্টার মামলা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় হয় ওই কিশোরকে।

অভিযুক্ত কিশোরের বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে নির্দোষ। খেলাধুলার ছলে শিশুটিকে একটি থাপ্পর মারে আমার ছেলে। এ কারণে ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করে প্রভাবশালীরা আমার ছেলেকে মারপিট করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। আমার ছেলেকে নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে বিচার দাবি করছি।’

মামলার বাদী শিশুটির বাবা বলেন, ‘খেলাধুলার ছলে আমার মেয়েটিকে প্রতিবেশীর ঘরের কাছে নিয়ে অশোভন আচরণ করে ছেলেটি। পরে মেয়ের কান্নায় আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা দিলে পুলিশ ওকে ধরে নিয়ে যায়।’

কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান দুলু বলেন, ‘ওই কিশোর তাদের প্রতিবেশী তিন বছরের একটি মেয়েকে হেনস্থা করেছে বলে আমাকে জানানো হয়। আমি ভুক্তভোগী পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।’

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তিন বছরের একটি শিশুকে যৌন হয়রানি চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ছেলেটিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে তাকে যশোরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।’

ক্যাপশন :

রংপুরের বদরগঞ্জে শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ঘরে আটকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়। ভাইরাল ভিডিও থেকে ছবিটি সংগৃহীত।