র্যাব-ডিবি সেজে ডাকাতি, গ্রেপ্তার নয়
রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকের আশপাশে থাকতেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য। কেউ ব্যাংক থেকে অনেক টাকা তুলছেন- এ তথ্য জেনে সদস্যরা তাঁর কাছে যেতেন। নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলে অন্য স্থানে নিয়ে মারধর করে টাকা ছিনতাই করে নিতেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এমন নয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডিবি বলছে, তারা মূলত ছিনতাই ও ডাকাতি করতে ডিবি ও র্যাবের পরিচয় দিতেন।
আজ বুধবার ডিবি গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য জানান। এ অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন তিনিই। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই ও ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, বিদেশি পিস্তল, ওয়্যারলেস সেট, এক জোড়া হাতকড়া ও ডিবির পোশাক উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ছিনতাই, ডাকাতি, দলবদ্ধ ধর্ষণ, অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা আছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন আবদুল্লাহ আল মামুন, ইমদাদুল শরীফ, খোকন মিয়া, মাসুদুর রহমান (তুহিন), মামুন সিকদার, কামাল হোসেন, ওয়াহিদুল ইসলাম, ফারুক ব্যাপারী ও মতিউর রহমান।
মশিউর রহমান বলেন, ‘এরা মূলত ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তিকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে সাভার-আশুলিয়া, বেড়িবাঁধ এলাকা, পূর্বাঞ্চল গ্রামীণ এক্সপ্রেস রাস্তা হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে নিয়ে যেতেন। তারপর মারধর করে টাকা, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড কেড়ে নিয়ে টাকা তুলে নিতেন।’
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাওয়া ও তুলতে যাওয়া ব্যক্তিদের নিশানা করত চক্রটি। কখনো র্যাব আবার গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে রাস্তা থেকে এই লোকদের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ঢাকার বাইরে নির্জন স্থানে গিয়ে মারধর করে তাঁদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে দিত।
গোয়েন্দা পুলিশ আরও জানায়, ডিবি গুলশান বিভাগের কাছে খবর আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভুয়া পোশাকে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় একটি চক্র ছিনতাই-ডাকাতির জন্য জড়ো হয়েছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে তাদের একাধিক দল মতিঝিলের বলাকা চত্বর, ইউনুস সেন্টারের আশপাশের একাধিক ব্যাংকের কাছাকাছি অবস্থান নেয়। ওই সময় মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার নিয়ে ইউনুস সেন্টারের কাছে শিকারের জন্য ওত পেতে থাকে চক্রটি। একপর্যায়ে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের ধরতে গেলে চক্রের সদস্যরা গাড়িতে উঠে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় উপস্থিত জনতার সহায়তায় তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ।