রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করুন : রাষ্ট্রদূত
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্ব-প্রণোদিত প্রত্যাবাসন এবং কাঙ্ক্ষিত সামাজিক পুনর্মিলনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।’
সম্প্রতি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ‘শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি : সংঘাত ও সংঘাত-পরবর্তী পরিস্থিতির ন্যায়বিচার’ শীর্ষক এক উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্যকালে এ কথা বলেন রাবাব ফাতিমা। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
আজ শনিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, নিরাপত্তা পরিষদের চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের সভাপতি বেলজিয়াম এই উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে।
সেখানে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসা দেশগুলোর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিচার ব্যবস্থার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নৃশংস অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।
২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) নির্দেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের কারণে বাধ্য হয়ে নিজ দেশে ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
নিরাপত্তা পরিষদের ‘নারী শান্তি ও নিরাপত্তা’ এবং ‘যুব শান্তি ও নিরাপত্তা’ এজেন্ডাগুলোর প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘সশস্ত্র সংঘাতকালে শিশু ও নারীদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং এর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের বহুপক্ষীয় প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে সমর্থনদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সেনা ও পুলিশ পাঠানো অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতপ্রবণ এলাকায় বাংলাদেশ যে অবদান রেখে চলেছে, তা তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি।
‘সংঘাত পরবর্তী পরিস্থিতি’ বিষয়টির ওপর জোর দিয়ে ফাতিমা বলেন, ‘যাতে কেউ অপরাধের দায়মুক্তি না পায়, তা নিশ্চিত করা, অপরাধের দায়বদ্ধতা নিরূপণ করা এবং অতীত সংঘাত ও সহিংসতার দুষ্টচক্র ভেঙে ফেলা অত্যন্ত জরুরি।’ এ ক্ষেত্রে অসমতা ও বৈষম্যসহ সমাজে সংঘাত ও সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে, এমন মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।