রাস্তায় মানুষ নেই, কিন্তু হাটে অভাব নেই!
সড়কে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের টহল। রাস্তায় জটলা দেখলেই নেমে সবাইকে সতর্ক করছে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানাচ্ছে। কোথাও কোথাও পুলিশ লোকজনকে ধাওয়াও দিচ্ছে। চেষ্টা একটাই, যেন জনসমাগম না ঘটে। জেলার প্রায় সবকটি উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানাও করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের নানা প্রচেষ্টাতেও থেমে নেই হাটবাজারে লোকসমাগম।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কসহ উপজেলা পর্যায়ের সড়কগুলো ফাঁকা থাকলেও সাপ্তাহিক বাজারগুলোতে আগের মতো ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম হচ্ছে। এতে করে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, পটিয়া, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী উপজেলায় অন্তত দুই শতাধিক ছোট-বড় বাজার রয়েছে। এসব বাজারে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে। করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে দোকান, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কেউই মানছে না সেই নিষেধাজ্ঞা।
এদিকে, সবকটি উপজেলায় হোম কোয়ারেন্টিন না মেনে বাইরে ঘোরাঘুরি করায় কয়েকজন প্রবাসীকে জরিমানাও করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু প্রশাসনের এমন কড়াকড়িতেও কোনোভাবেই জনসামাগম বন্ধ করা যাচ্ছে না।
গতকাল দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বাজার কেরানীহাট, লোহাগাড়া উপজেলার কানুরাম বাজারসহ আরো বেশ কয়েকটি বাজার সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর এ-আলমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘সরকারিভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দোকান ও ফার্মেসি খোলা রাখার জন্য বলা হয়েছে। আমি আজকেও বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।’
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, ‘গতকাল রোববার সকালে পুলিশের ওয়াটার ক্যানন দিয়ে জীবাণুনাশক পানি ছিটানো হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় জনসাধারণকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতন করার কাজ চলছে।’
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌছিফ আহমেদ বলেন, ‘সব ধরনের জনসামগম এড়িয়ে চলার জন্য সেনাবাহিনী, সিভিল প্রশাসন ও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। হাটবাজারে যাতে লোকসমাগম কম হয়, সে জন্য এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে হতদরিদ্র, দিনমজুরদের জন্য দেওয়া ত্রাণ সহায়তাও বিতরণ করা হচ্ছে।’