যখন রাজনীতি কঠিন ছিল, একাব্বর তখন রাজনীতি করেছিলেন : সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একাব্বর হোসেন ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করতেন। তিনি ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এ দেশে সামরিক জান্তা সরকার শুরু হয়। সে সময় কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করা ছিল কঠিন ব্যাপার। ওই সময় ছাত্র রাজনীতিই অনেক কঠিন ছিল। কিন্তু, তখন আমাদের একাব্বর হোসেন খুবই সক্রিয় ছিলেন।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাব আলোচনায় অংশ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার, একটি পার্লামেন্টে এত জনের মৃত্যু, এটা খুবই অস্বাভাবিক একটি ঘটনা। সবচেয়ে বড় কথা—যাঁরাই এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তাঁরাই যেন একে একে চলে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ আগে আপনারা এক সাংসদের কাছ থেকে শুনেছেন—একাব্বর হোসেন কীভাবে এ (বঙ্গবন্ধু) হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছিলেন, কথা বলেছিলেন, সংগ্রাম গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। (তিনি) একটি আদর্শের প্রতি নিবেদিত ছিলেন। কলেজে ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ভালো সংগঠক ছিলেন। ওই সময়ে হলে রাজনীতি করা খুব কঠিন ছিল। ওই সময় অনেকে একটি আদর্শ নিয়ে টিকে থাকতে পারেনি। কিন্তু, আদর্শের প্রতি (একাব্বর হোসেনের) এত টান ছিল যে, তিনি সবকিছু ছাপিয়ে টিকে ছিলেন। যখন রাজনীতি কঠিন ছিল, একাব্বর তখন রাজনীতি করেছিলেন।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘২০১৯ থেকে এ পর্যন্ত আমরা ২০ জন সংসদ সদস্যকে হারালাম। বলতে গেলে, প্রতিবারই আমরা সংসদ অধিবেশন শুরু করেছি শোক প্রস্তাব নিয়ে। কিন্তু, এ চলমান সংসদ অধিবেশন যখন শুরু হয়, তখন শোক প্রস্তাব দিয়ে শুরু হয়নি। সেজন্য একটু স্বস্তিতে ছিলাম। কিন্তু, চলমান সংসদের মধ্যে একাব্বরের মৃত্যুর ঘটনা চলে এলো। যত জনকে আমরা সেই ২০১৯ সাল থেকে হারিয়েছি, তাঁদের একটু স্মরণ করতে চাই।’ এরপর প্রধানমন্ত্রী একে একে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম থেকে শুরু করে একাব্বরের নাম স্মরণ করে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “গণতন্ত্রের জন্য আমরা যে দীর্ঘ আন্দোলন করেছি, এখানে একাব্বরের একটি ভূমিকা ছিল। যখনই ডেকেছি, তাঁকে পেয়েছি। আমি যখন তাঁকে প্রথম নমিনেশন দিয়েছিলাম, আমি জানি সে কখনও কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়া বা চাঁদা তুলত না। তখন সে তরুণ ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কিছু লাগবে কি না? সে সোজা বলে দিল—‘আমার কিছু লাগবে না। আমার চাচা আছেন, উনি দেখবেন। আর, জনগণের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে।’ ঠিকই, জনগণের সঙ্গে তাঁর একটি গভীর যোগাযোগ ছিল, আত্মীয়তা ছিল। তার নির্বাচনে সে খুব সহজভাবেই জিতে আসত। আর, মির্জাপুরে বহু উন্নয়নমুখী কাজ হয়েছে। কেউ কখনও বলতে পারেনি, সেখানে কোনোরকম বাধা দেওয়া বা কাজে অনিয়ম হয়েছে।”