মেঘনার পানিতে ডুবেছে ইলিশা ঘাট, ফেরি চলাচল ব্যাহত
ভোলার মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইলিশা ফেরিঘাট প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে ছয় ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এই রুট ব্যবহারকারীরা। দ্রুত একটি হাই ওয়াটার ঘাটের পন্টুন দেওয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের।
শুধু একটি পন্টুন না থাকায় প্রতিবছরই বর্ষায় ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হয়। মেঘনা নদীর পানিতে এমনভাবে ঘাটের রাস্তা ডুবে রয়েছে, যা দেখে বোঝার কোনো উপায় থাকে না যে এটি কোনো ফেরির গ্যাংওয়ের রাস্তা। অথচ একটি হাই ওয়াটার ফেরিঘাট থাকলেও শুধু একটি পন্টুনের অভাবে এভাবেই এই রুট বন্ধ থাকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছয় ঘণ্টাই বন্ধ রাখতে হচ্ছে এই রুটের ফেরি চলাচল। যার ফলে ঘাটের দুই পাশে আটকা পড়েছে অন্তত চার শতাধিক গাড়ি। যে কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এই রুট ব্যবহারকারীরা।
এক সপ্তাহ ধরে আটকা পড়ে রয়েছে জ্বালানি তেলসহ কাঁচামালের গাড়িগুলো। এ জন্য চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই রুটের গাড়িচালকরা। এর পর রয়েছে ঠিকমতো ফেরি না চলার অভিযোগও।
কাঁচামাল নিয়ে ঢাকাগামী ট্রাকচালক মো. আতাহার আলী বলেন, 'তিন দিন ধরে আটকে আছি ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে। ঘাট মেঘনা নদীর পানিতে প্লাবিত থাকায় ফেরি নিয়মিত চলতে না পারায় আটকা পড়ে আছি।'
চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন শাহাবাজপুর গ্যাস ফিল্ডের তেল পরিবহনকারী লরির চালকরাও। পাঁচ দিন ধরে আটকা পড়ে থাকায় চরম হয়রানির শিকারের কথা জানালেন তাঁরা। চট্টগ্রামগামী বাসযাত্রীরা কখন গিয়ে পৌঁছবে, তার কোনো নিশ্চিয়তা নেই।
এ ছাড়া হতাশার কথা জানাল দৌলতখান, লালমোহন, বাংলাবাজার ও চরফ্যাসন থেকে আসা একাধিক যাত্রী। সকালে এসে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকার পরও ফেরিতে উঠতে না পেরে তাঁরা জানান, রাত কয়টায় ফেরি উঠতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। চট্টগ্রামে পৌঁছা তো পরের বিষয়।
খুলনা, বরিশাল বিভাগসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় ২১ জেলার মানুষ ও যানবাহন চালকদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় এই রুট। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী ও কুমিল্লা যেতে কিংবা চট্টগ্রামসহ ওসব অঞ্চল থেকে পায়রা বন্দর আসতে খুবই কম সময় লাগে এই রুটে চলাচলে।
ভোলার যাত্রীদের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম যেতে যেখানে সময় লাগার কথা সাত থেকে আট ঘণ্টা, সেখানে এখন সময় লাগছে ২২ থেকে ২৪ ঘণ্টা। তাও অনিশ্চিত। জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে চলাচল করতে হচ্ছে রুটের চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীদের। সকালে ঘাটে এসে ফেরি না পেয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত।
এ বিষয়ে ফেরির ঘাট ব্যবস্থাপক কে এম এমরান বলেন, 'ফেরির গ্যাংওয়েসহ রাস্তা মেঘনা নদীর পানিতে ডুবে থাকায় ছয় ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে ফেরি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। অথচ হাই ওয়াটার ঘাট থাকলেও শুধু একটি পন্টুনের অভাবে জোয়ারের সময় ফেরির লোড-আনলোড করা সম্ভব হচ্ছে না। চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। যে কারণে পারাপারের জন্য দুই তীরে অন্তত চার শতাধিক গাড়ি আটকা পড়ে আছে।