মিয়ানমারের জলসীমায় আটক ১৭ জেলেকে ফেরত এনেছে কোস্টগার্ড
মিয়ানমারে জলসীমায় আটক বাংলাদেশি ১৭ জেলেকে ফেরত দিয়েছে দেশটির নৌবাহিনী। আজ শুক্রবার জেলেদের মিয়ানমার সিট্যুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ওই জেলেদের কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রতিনিধি দল।
শুক্রবার রাত ৯ টায় মিয়ানমারের সিট্যুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটের একটি টিম ট্রলার সহ ১৭ জেলেকে নিয়ে সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের দক্ষিণ পূর্বে দুই দেশের জলসীমার শূণ্যরেখায় নিয়ে আসেন। পরে তাদের বিসিজিএস তাজউদ্দিন জাহাজে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার ১৭ জন জেলেকে নিজেদের জলসীমা থেকে উদ্ধার পূর্বক আটক করেছিল মিয়ানমার নৌবাহিনী। এদের মধ্যে ভোলা জেলার ১৩ জন, চট্টগ্রামের দুইজন, মুন্সীগঞ্জ ও ঝালকাঠির একজন করে বাসিন্দা রয়েছেন।
কোস্টগার্ড সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলার 'এফবি গোলতাজ-৪' গত তিনদিন আগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে সাগরে মাছ শিকারে যায়। দুই দিন পর ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসতে ভাসতে মিয়ানমারের সীমানায় পৌঁছে। সেখানে মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ 'ইন-লে' ১৭ জন জেলেসহ বাংলাদেশি ট্রলারটি উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড আটক জেলেদের ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়। কোস্টগার্ড ও মিয়ানমার নৌবাহিনীর আলোচনায় সেদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটকে ১৭ জেলেসহ ট্রলার টি হস্তান্তর করেন মিয়ানমার নৌবাহিনী।
এ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে কোস্টগার্ডের জাহাজ ‘তাজউদ্দীন’ এর কমান্ডার এস এম মেজবাহ উদ্দিন জানান, সরকারের প্রচেষ্টায় মিয়ানমার নৌবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে ফিসিং ট্রলারসহ ১৭ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। ইঞ্জিন বিকল হয়ে বাংলাদেশী ট্রলার টি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাথিডং উপকূলের মাইও নদীর মোহনায় ঢুকে পড়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রথম সাগরের মাঝখানে দুই দেশের জলসীমার শূণ্যরেখায় দুই দেশের বাহিনী পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে আটক বাংলাদেশি জেলেদের ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।’
মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা জেলেরা হলেন, ভোলা জেলার সদরের চুন্নাবাদ এলাকার জাকির হোসাইন (৪৪), একই জেলার চরফ্যাশন উপজেলার নোরাবাদ এলাকার আবুল কালাম (৫৬), গোলদার হাট এলাকার কামাল সওদাগর (৪৯), উত্তর মাদ্রাজ এলাকার নুরুল ইসলাম (৫৯), নীলকমল এলাকার মোতাহার (৫৫), একই এলাকার বেলাল হোছাইন (২৭), মো. ফারুক (৪৩), মো. ছলিম (৪০), চরফ্যাশন সদরের মো. জসিম (৫১), চরফ্যাশন পৌর এলাকার আবুল কালাম (৫৭), একই এলাকার মো. নেছার (৪৬), দৌলতখান উপজেলার কলাখোপা এলাকার মো. আলামীন (১৯), চরখলিফা এলাকার মো. জহিরুল ইসলাম (২৯), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শাহ আলম (৬১) , একই উপজেলার শোভনদন্দী এলাকার জসিম (৩৩), মুন্সীগঞ্জের টঙ্গী বাড়ি উপজেলার আবু সায়েদ (৩৬) ও ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলার মোঃ নুরুজ্জামান (৪৬)।
ফেরত আসা জেলে শাহ আলম বলেন, ‘আমরা ২৯ নভেম্বর সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে দুইদিন পর ইঞ্জিন বিকল হয়ে মিয়ানমার সীমানায় পৌঁছে যাই। সেদেশের নৌবাহিনী আমাদের উদ্ধার করে। পরে সরকারের আন্তরিকতায় কোস্টগার্ডের উদ্যোগে দ্রুত সময়ে ফিরে আসা সম্ভব হয়েছে।’