মা-ভাইয়ের লাশ দাফন, বাবার লাশের অপেক্ষায় দুই ছেলে
রাজধানীর শ্যামবাজারসংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চডুবিতে মা হাসিনা বেগম (৩৫) ও ছোট ভাই সিফাতের (৯) লাশ উদ্ধার হলেও বাবা আইনজীবী আবদুর রহমানের খোঁজ মেলেনি। তাই বাবার লাশের অপেক্ষায় রয়েছে দুই ছেলে হাসিফ রহমান (২০) ও রিফাত রহমান (১৫)।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে বাবাকে খুঁজতে বের হন হাসিফ রহমান। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাবার খোঁজ পাননি। আগের দিন সোমবার লঞ্চডুবিতে নিহত মা ও ভাইয়ের লাশ নিয়েই গ্রামের বাড়ি টঙ্গীবাড়ি উপজেলার আবদুল্লাহপুরে ফিরে আসে ওই দুই ভাই। ওই দিনই রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে মা ও ভাইকে।
গতকাল ট্রলার নিয়ে বুড়িগঙ্গার বুকে বাবাকে খুঁজে বেড়ান বড় ছেলে হাসিফ। শুধু বাবার লাশটি চায় দুই ভাই। চরম উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছে তারা। বাবার লাশটি এনে মা ও ভাইয়ের কবরের পাশে দাফন করাতে চায় তারা। সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহত আবদুর রহমানের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ছেলে রিফাত রহমান জানায়, তার বাবা আবদুর রহমান ঢাকা জজকোর্টে কাজ করতেন। তারা পুরান ঢাকায় কসাইটুলী এলাকায় বসবাস করত। করোনার কারণে লকডাউনে তার বাবার কাজ বন্ধ হয়ে গেলে কয়েক মাস আগে তাদের দাদার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামে চলে আসে। পরে তাদের ঢাকার বাসার কিছু ভাড়া বাকি থাকায় বাড়ির মালিক তাদের ফার্নিচার আটকিয়ে রেখেছিল। গত সোমবার সেই ফার্নিচার আনতে ঢাকা যাচ্ছিল তার বাবা, মা ও ছোট ভাই। পরে সকাল সোয়া ৯টার দিকে লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। এতে তার বাবা নিখোঁজ রয়েছেন। মা ও ছোট ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করে দাফন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার মুন্সীগঞ্জ সদরের মীরকাদিম নদীবন্দর লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া মর্নিং বার্ড নামে লঞ্চ রাজধানীর শ্যামবাজারসংলগ্ন বুড়িগঙ্গায় এমভি ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায়। এতে ৩৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩২ জনই মুন্সীগঞ্জের।