মাদ্রাসায় শিশুকে বেধড়ক মারধর : পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
চট্টগ্রামের হাটহাজারীর একটি মাদ্রাসায় আট বছর বয়সী এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সংশ্লিষ্টদের তা জানাতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন। এ ছাড়া ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে হওয়া মামলা কোনো পক্ষের চাপের কারণে প্রত্যাহার করা হয়েছে কি না, তাও জানাতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রামে আট বছর বয়সী ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
শিশু শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়াকে গতকাল বুধবার বিকেল ৩টার দিকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে রাঙ্গুনিয়ার সাফরভাটা এলাকা থেকে আটক করা হয়।
এর আগে, মাদ্রাসার ওই শিক্ষার্থীকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে হাটহাজারী উপজেলার ইউএনও রুহুল আমিনের নেতৃত্ব গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মাদ্রাসা থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়ে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার ওই শিক্ষার্থীর মা-বাবা তার সঙ্গে দেখা করতে মাদ্রাসায় যান। বিকেল ৫টার দিকে ফিরে আসার সময় ওই শিক্ষার্থীও মা-বাবার পেছন পেছন চলে আসে। এরপর শিক্ষক ইয়াহিয়া সেখান থেকে ওই শিক্ষার্থীকে ধরে এনে পেটাতে শুরু করেন। এমনকি মাদ্রাসার ভেতরেও শিশুটির ওপর নির্যাতন চালান তিনি।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তা থেকে শিশুটিকে ধরে নিয়ে যান ইয়াহিয়া। পরে মাদ্রাসার ভেতরে নিয়েও পেটাতে থাকেন। শিশুটির চিৎকারেও তাঁর মন গলেনি। ইয়াহিয়া পেটাতে পেটাতে বলতে থাকেন, আর বের হবি! এদিকে ইয়াহিয়ার শিশু নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের পর নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
ইউএনও রুহুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষক ইয়াহিয়াকে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই শিশুটির মা-বাবা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিতে চাওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসন ও আমার পক্ষ থেকে মামলার খরচ চালানোর কথা বললেও তাঁরা তাতে রাজি হননি। এমনকি তাঁরা একটি আবেদনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কথা বলেন।