ভৈরবে স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ গ্রেপ্তার ৩
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মোবাইলফোনে স্ত্রীকে মেরে ফেলার হুমকির কয়েক ঘণ্টা পর ছাদ থেকে পড়ে তানজিনা ইসলাম (২৭) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ভৈরব শহরের রানীবাজার এলাকায়।
তানজিনার স্বজনদের দাবি, তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে তানজিনাকে হত্যা করেছেন স্বামী মাসুদুজ্জামান। ঘটনার পর পুলিশ নিহত গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় স্বামী মাসুদুজ্জামান, শ্বশুর হাজি আবুল খায়ের ও দেবর তোফাজ্জল হোসেনকে।
তানজিনার স্বজনরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে তানজিনা শহরের চণ্ডীবেরে বাবার বাড়িতে আসেন এবং তার ভাবিকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে গাইনি ডাক্তার দেখান। বিষয়টি সহজে মেনে নিতে পারেননি তার স্বামী মাসুদুজ্জামান। দুপুর ১টার দিকে স্ত্রী বাসায় ফিরলে মেরে ফেলার হুমকি দেন মোবাইলফোনে। তানজিনা বিষয়টি তার ভাই-ভাবিকে জানান এবং স্বামীর রাগ ভাঙাতে দ্রুত বাসায় ফিরে আসেন। বিকেল ৫টার দিকেই তানজিনার মৃত্যু সংবাদ আসে।
তানজিনার ভাই জাবির মিয়া অভিযোগ করেন, তানজিনার স্বামী মাসুদুজ্জামান তার বোনকে ভবনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করেছেন।
প্রতিবেশীরা জানায়, শহরের রানীবাজার এলাকার বাসিন্দা খায়ের মিয়ার ছেলে মাসুদুজ্জামানের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয় তানজিনার। মাসুদুজ্জামান একজন ঔষধ ব্যবসায়ী। বিয়ের পর থেকেই সামান্য খুঁটি-নাটি বিষয় নিয়ে তিনি তানজিনাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। তাই দুই শিশু সন্তানের মা তানজিনার পারিবারিক জীবন সুখের ছিল না।
এদিকে স্ত্রী হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে তানজিনার স্বামী মাসুদুজ্জামান দাবি করেন, আজ বিকেলে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এক ফাঁকে তানজিনা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়েন। তারা এটি টের পেয়ে তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ইসমত তাহমিনা তাম্মি জানান, মরদেহের মাথা ও ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত শেষে মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদুল আলম বলেন, এ ঘটনায় স্বামী-শ্বশুরসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।