বেতন না পেয়ে আশুলিয়ায় গার্মেন্টে ভাঙচুর, কারখানা বন্ধ
বেতন না পেয়ে সাভারের আশুলিয়ায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেছে মালিকপক্ষ। এ সময় কারখানার ১৫ কর্মকর্তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করা হয়।
আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া বাজার এলাকায় কনকর্ড গার্মেন্টস গ্রুপের লিলি অ্যাপারেলস কারখানায় গতকাল বুধবার এ ঘটনা ঘটে। গতকালই কারখানার ৩৫ শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫০০ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কারখানার তিন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল বুধবার ওই পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের জুন মাসের বেতন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। ব্যাংক থেকে বেতনের টাকা একটু দেরিতে আসায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ওই পোশাক কারখানায় ভিতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কারখানার ফটক আটকিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালায় শ্রমিকরা।
এ সময় শ্রমিকরা কারখানার ২০টি ল্যাপটপ, ৩৫টি কম্পিউটার, ১০টি ফায়ার ডোর, ডাটা সার্ভার, ৮৫টি সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। সেইসঙ্গে ড্রয়ার ভেঙে নগদ এক লাখ টাকাসহ কারখানার শিপমেন্টের জন্য তৈরি করা দুই লাখ পিস শার্ট লুটপাট করে। এরপর তারা কারখানার জেনারেল ম্যানেজার মেজর (অব.) জাহিদুর রহমান খানসহ ১৫ কর্মকর্তাকে পিটিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় বলে মালিকপক্ষ মামলায় অভিযোগ করেছে।
আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ কারখানাটি পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় কারখানাটির প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া আজ থেকে মালিকপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। ঈদের আগে প্রস্তুত করে রাখা পোশাক শিপমেন্টের জন্য বিদেশে না যেতে পারায় কারখানার মালিক বিপাকে পড়েছেন।
ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে রাতে আশুলিয়া থানায় কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ শাহ আলমকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন কারখানার ডেপুটি ম্যানেজার ওমর আলী।
এ ঘটনায় রাতেই পুলিশ আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি ফ্লোর ইনচার্জ শাহ আলম (৩৫), প্যাকারম্যান রাকিব ফরাজী (২১) ও কোয়ালিটি ইনচার্জ রাসেল আকনকে (২৯) আটক করেছে।
এ বিষয়ে লিলি অ্যাপারেলন্স লিমিটেড কারখানার জেনারেল ম্যানেজার মেজর (অব.) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘কারো উসকানিতে শ্রমিকরা কারখানাটিতে ভাঙচুর করতে পারে বলে আমরা মনে করছি। তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেড়িয়ে আসবে।’ এদিকে, কারখানার কর্মকর্তাদের মারধরের সময় তাদের মোবাইল ফোনও লুটপাট করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান বলেন, ‘মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ ছাড়া কী কারণে শ্রমিকরা কারখানাটি ভাঙচুর করেছে সে বিষয়েও তদন্ত চলছে।’