‘বুলবুল’-এর আঘাতে ২৬৩ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ১৬টি জেলার ১০৩টি উপজেলায় আঘাত হেনেছে। এতে ২৬৩ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই তথ্য দেন কৃষিমন্ত্রী। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানসহ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ৮ থেকে ১০ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় বুলবুল দেশের উপকূলীয় দক্ষিণাঞ্চলের জেলা সমূহের ওপর আঘাত হেনেছে। আঘাতের ফলে উপকূলীয় ও পার্শ্ববর্তী ১৬টি জেলার ১০৩টি উপজেলায় এর প্রভাব ফেলেছে। এতে রোপা আমন, শীতকালীন শাক সবজি, সরিষা, খেসারি, মসুর ও পান ফসলের ক্ষতি হয়েছে।’
মর্ত্রী বলেন, ‘আবাদকৃত ২০ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৮ হেক্টর জমির মধ্যে দুই লাখ ৮৯ হাজার ৬ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। বাংলাদেশ ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের দেশ। ইতিহাসের বিভিন্ন সময় এই ভূখণ্ডে ঘটে গেছে ভয়ংকরতম কিছু ঘূর্ণিঝড়। ইতিহাসের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে এগুলো তাণ্ডব চালিয়েছে আমাদের দেশে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আক্রান্ত জমির পুরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কোনো কোনো জমির ফসল আংশিকভাবে ক্ষতি হয়েছে। তবে ধানের বড় অংশটিই পরিপক্ব হয়ে উঠেছিল। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসাব আমরা দিতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক প্রাপ্ত তথ্য মতে আক্রান্ত ১৬টি জেলা হচ্ছে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর,ঝালকাঠি, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর। মোট ৫০ হাজার ৫০৩ জন কৃষকের ফসল নষ্ট হয়েছে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রোপা আমন দুই লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৪ হেক্টর, শীতকালীন সবজি ১৬ হাজার ৮৮৪ হেক্টর, সরিষা এক হাজার ৪৭৬ হেক্টর, খেসারি ৩১ হাজার ৮৮ হেক্টর, মসুর ১৯৫ হেক্টর, পান দুই হাজার ৬৬৩ হেক্টর, অন্যান্য ফসল দুই হাজার ১২৬ হেক্টর জমির।’
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বর্ধিত প্রণোদনা কর্মসূচির প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি লোনের ব্যাপারেও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’