বিধিনিষেধের মধ্যেই পাকুন্দিয়ায় আ.লীগের বিক্ষুব্ধদের মিছিল
সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যেই কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নবঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে জেলা কমিটি।
এর প্রতিবাদে এবং আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের সমর্থক নেতাকর্মীরা আজ দুপুর ১২টায় পাকুন্দিয়া উপজেলা ডাকবাংলো চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্যবিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতায়েম হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবীর, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো. বোরহান উদ্দিন, সদস্য অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন, জেলা শ্রমিক লীগের উপদেষ্টা আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ, উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বাবুল আহমেদ, নারান্দী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, সুখিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ টিটু, বুরুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা রুবেল, চণ্ডীপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন মিলন, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. হেলাল উদ্দিন ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নাজমুল হক দেওয়ান।
সমাবেশে বক্তারা ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিনকে যুদ্ধাপরাধী এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি দাবি করে অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করার আহ্বান জানান। তা না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। সমাবেশ শেষে ডাকবাংলো মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে পাকুন্দিয়া পৌর সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
এর আগে সর্বশেষ ২০০০ সালের ১৮ আগস্ট অ্যাডভোকেট আ ফ ম ওবায়দুল্লাহকে আহ্বায়ক করে পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু ও মোতায়েম হোসেন স্বপন। ২০২০ সালে আহ্বায়কের পদ থেকে অ্যাডভোকেট আ ফ ম ওবায়দুল্লাহ পদত্যাগ করার পর থেকে প্রায় এক বছর ধরে আহ্বায়ক ছাড়াই চলে আসছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান। সভা পরিচালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল। অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু এ সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং সভাস্থল ত্যাগ করে বের হয়ে যান।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ বলেন, সোহরাব উদ্দিনকে আহ্বায়ক হিসেবে পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কেউ মেনে নেবে না।
উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, সোহরাব উদ্দিন এমপি থাকাকালে পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের সভায় ১৪৪ ধারা জারি করিয়েছেন। ৭৮ জন নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের সভামঞ্চে আগুন দিয়েছেন। তাঁকে আহ্বায়ক হিসেবে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি সোহরাব উদ্দিনের কমিটিতে সদস্যও থাকব না।
সদ্যঘোষিত পাকুন্দিয়া উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে।