বিট কয়েন প্রতারক চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
রায়হান হোসেন (২৯) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। করতেন ওয়েব ডেভেলপিংয়ের কাজ। কিন্তু গত বছরের জুন থেকে এক পাকিস্তানি নাগরিকের সহায়তায় শুরু করেন বিট কয়েনের নামে প্রতারণা। সম্প্রতি কিনেছেন এক কোটি সাত লাখ টাকা দামের একটি অডি গাড়ি।
এসব টাকা রায়হান হোসেন অনলাইনে বিট কয়েন কেনা-বেচার প্রতারণা করে আয় করেছেন। এই অভিযোগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর সফিপুর দক্ষিণপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।
তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার বলেন, ‘প্রতারক রায়হান এমআরএইচ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট নামে একটি কোম্পানির পরিচয় দিয়ে বিট কয়েনের নামে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। তার ২৫০টি বিট কয়েন অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। অষ্টম শ্রেণি পাস রায়হান নিজেই পরিচয়পত্র তৈরি করতেন। আট বছর ধরে তিনি অনলাইন আউটসোর্সিং ব্যবসা করে আসছিলেন।’
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘রায়হান বিট কয়েনের মাধ্যমে সাধারণ লোকজনের টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণাসহ মানি লন্ডারিং, ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং ও বিপুল অঙ্কের বিট কয়েন লেনদেন করেছেন। বাংলাদেশে বিট কয়েন প্রতারণা চক্রের মূল হোতা এই রায়হান হোসেন।’
তোফায়েল মোস্তফা বলেন, ‘মাত্র এক মাসে রায়হান হোসেনের অ্যাকাউন্টে ৩৫ লাখ ইউএস ডলার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে র্যাব। এ ছাড়া তার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩৫ লাখ টাকারও সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব ডলার ও টাকা সব অবৈধ বিট কয়েন কেনা-বেচা ও প্রতারণার মাধ্যমে এসেছে।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘রায়হান ২০০৬ সালে কম্পিউটারের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ২০১১ সাল থেকে ওয়েব ডেভেলপিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনার কাজ করছিলেন।’
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের সময় রায়হান হোসেনের কাছ থেকে ১৯টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ২২টি সিমকার্ড, ২৫ মার্কিন ডলার, একটি কম্পিউটার, তিনটি মোবাইল ফোন, তিনটি ভুয়া চালান বই, একটি ট্রেড লাইসেন্স, একটি টিন সার্টিফিকেট, একটি মাইক্রোফোন, একটি ক্যামেরা, একটি রাউটার, একটি হেডফোন, একটি মডেম ও বিভিন্ন ব্যাংকের চারটি চেক বই জব্দ করা হয়।