বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা, সাত ‘জ্বিনের বাদশা’ গ্রেপ্তার
‘আমরা জ্বিনের বাদশা। পৃথিবীর সব কিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে। আমরা সব সমস্যার সমাধান দিতে পারি। বহুগুণে সম্পদ বাড়িয়ে দিতে পারি।’ সাধারণ মানুষকে এসব কথা বলে প্রতারণার করেন তাঁরা। হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। এমন একটি চক্রের সাত সদস্যকে গতকাল বুধবার ভোলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সুমন ফকির (২০), মুনসুর আহম্মেদ (২৫), হাছনাইন ফকির (২০), মো. হাবিবুল্লাহ (৩২), লোকমান ভূইয়া কাজী (২৭), রিয়াজ উদ্দিন (৩৪), ফজর আলী (৩৬)।
মোস্তফা কামাল বলেন, ‘চলতি বছরের ৩ অক্টোবর রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন নাসির হোসেন নামের একজন। বাদী মামলার এজাহারে অভিযোগ করে বলেন, জ্বিনের বাদশা সেজে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্র আমার মায়ের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরে মামলাটি সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার তদন্ত শুরু করে। বিভিন্ন প্রযুক্তির সহয়তায় গতকাল ভোলা থেকে জ্বিনের বাদশা চক্রের সাতজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
প্রলোভনের বিষয়ে মোস্তফা কামাল বলেন, জ্বিনের বাদশারা বলতেন, আমরা সব সমস্যার সমাধান দিতে পারি। সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারি। শুধু আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। এসব বলে তারা প্রথমে ২১০০ টাকা দিয়ে ওই মহিলাকে রেজিস্ট্রেশন করান। তারপর ধাপে ধাপে মোট ২৫ লাখ টাকা দিয়েছেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ‘একটি পত্রিকায় ‘মুশকিল আসান’ নামের একটি বিজ্ঞাপন দেখেন ওই মহিলা। পরে সেখান থেকে একটি ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন। এরপর বেশ কিছুদিন কথা বলেন তিনি। সব বিশ্বাসও করেন। পরে তাঁর নিজের অ্যাকাউন্টে থাকা ২৫ লাখ টাকা তুলে চলতি বছরের পহেলা জুন থেকে পহেলা অক্টোবর পর্যন্ত তাদের দিয়েছেন। বিকাশ, রকেট ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তিনি টাকাগুলো দিয়েছেন। এই ব্যাপারগুলো ভদ্র মহিলার পরিবার জানতেন না। একপর্যায়ে যখন এক প্রতিবেশীর কাছে টাকা ধার চান তিনি তখন পরিবার জানতে পেরে মামলাটি করেন।’
মোস্তফা কামাল আরো বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সব স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে তাদের কাছে কোনো টাকা পাওয়া যায়নি। আগামীকাল তাদের বিরুদ্ধে আদালতে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। রিমান্ডে নিলে সব জানা যাবে। মামলার তদন্তের স্বার্থে আমরা বাদীর মায়ের নাম প্রকাশ করছি না।’