বহুদিন পর ফুটল পদ্ম দোবিলা বিলে
চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের দোবিলা বিলে বহুদিন পর ফুটেছে পদ্মফুল। হারিয়ে যাওয়া পদ্ম সগৌরবে ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী।
তবে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় বংশবিস্তার করতে পারছে না পদ্মফুল। বিলের বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে কস্তুরি আর বিভিন্ন জলজ গাছের লতাপাতায় ভরে আছে। তবে বিলের কিছু কিছু জায়গায় পদ্ম তার আবির রাঙানো রূপের মোহনীয় ভঙ্গিমা সাজিয়ে বসে আছে। পদ্মফুলের খবরে বিভিন্ন জায়গা থেকে নারী-পুরুষ আসছে দোবিলা বিলে।
গবেষকদের মতে, পদ্মফুল একটি বহুবর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। পদ্মফুলের একটি পরিপক্ব বীজ এক হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। অনুকূল পরিবেশ পেলে পদ্ম আবারও বংশবিস্তার করে। চলনবিলে ফোটা পদ্মের ক্ষেত্রেও সেটি হয়েছে। ভাদ্রের মাঝামাঝি কলি থেকে ফুল ফোটা শুরু করে। এখন আশ্বিনের শুরুতেও এর ধারাবাহিকতা চলমান। শীতের আগমন পর্যন্ত পদ্মকুলের আত্মপ্রকাশ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জলজ উদ্ভিদ গবেষকরা।
খবর পেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একদল গবেষক সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দোবিলায় পদ্মফোটা বিল পরিদর্শন করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের দোবিলা বিলে ফুটেছে পদ্মফুল। কিন্তু এর পরিধি খুবই সামান্য। বিলের বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে দখল করে আছে কচুরি আর বিভিন্ন জলজ গাছের লতাপাতা। মাঝেমধ্যে লাল পদ্ম স্বরূপে ফুটে আছে।
স্থানীয়রা মনে করে, বিলে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভালোভাবে যত্ন নিলে কচুরিপনাসহ বিভিন্ন জলজ গাছের লতাপাতা জন্মানোর সম্ভাবনা থাকবে না। এতে পদ্মফুল ভালোভাবে বংশবিস্তার করতে পারবে।
জলবায়ুর পরিবর্তন, অপরিকল্পিত রেল ও সড়কপথ নির্মাণ, ফসলি জমি কেটে পুকুর তৈরি, নদী ও খাল দখল, যত্রতত্র অবকাঠামো নির্মাণের ফলে বিশাল প্রাকৃতিক জলাধার চলনবিল এখন অস্তিত্ব-সংকটে রয়েছে। গবেষকদের অভিমত, পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় চলনবিল নিয়ে এখনই চিন্তাভাবনা আর পদক্ষেপ নেওয়ার সময়। তা না হলে হারিয়ে যাবে অনেক জলজ উদ্ভিদ, প্রাণী এবং প্রাণবৈচিত্র্যে ভরপুর ঐতিহ্যময় চলনবিল।