বনানীতে ছোট মেয়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত লতিফুর রহমান
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, লতিফুর রহমানের জানাজা গুলশানের আজাদ মসজিদে আজ বুধবার বাদ এশা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাত ১০টায় বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। ছোটমেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমানের পাশেই তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের নিজ বাড়িতে লতিফুর রহমান ইন্তেকাল করেন। তিনি বেশিরভাগ সময়ই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাড়িতে থাকতেন। সেখানেই আজ বুধবার সকালে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমান ১৯৯৮ সালে গুলশানের বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন।
লতিফুর রহমান এমন দিনে মারা গেলেন, যেদিন তাঁর নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাজ হোসেন ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত হন।
লতিফুর রহমান প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার অন্যতম মালিক। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ফুড চেইন পিৎজা হাট ও কেএফসি, পেপসি এবং ফিলিপসের বাংলাদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক ছিলেন তিনি। তিনি ২০১২ সালে মর্যদাপূর্ণ বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।
লতিফুর রহমানের জন্ম জলপাইগুড়িতে, ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট। দুই বোনের পর তাঁর জন্ম। পরে আরো এক বোন ও এক ভাই আছেন। ঢাকায় থাকতেন গেণ্ডারিয়ায়। ছোটবেলায় পড়তেন সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে চলে যান হলিক্রস স্কুলে। সে সময় হলিক্রসে ছেলেরাও পড়ত। ১৯৫৬ সালে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শিলংয়ে। সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে ভর্তি হন ক্লাস থ্রিতে। সেখান থেকে কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে।
১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা—এসব কারণে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। এসে ঢুকে যান পাটের ব্যবসায়। বাবা তখন চাঁদপুরে গড়ে তুলেছেন ডব্লিউ রহমান জুট মিল। ১৯৬৩ সালে কাজ শুরু হলেও উৎপাদন শুরু হয় ১৯৬৬ সালে।
১৯৬৬ সালে বাবার প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন লতিফুর রহমান। দেড় বছর কাজ শেখার পর ওই প্রতিষ্ঠানে নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন।