হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতে আটজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তিনজন। নিহতদের মধ্যে ছয়জনেরই মৃত্যু হয়েছে মাছ ধরতে গিয়ে। আজ শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এসব ঘটনা ঘটে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর। 

হারুনুর রশিদ চৌধুরী, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও শায়েস্তাগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতে তিনজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নূরপুর ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে আছকির মিয়া (৫৫), আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রনিয়া গ্রামের মালিক মিয়ার ছেলে মারফত আলী ও আবিদ আলীর ছেলে রবিন মিয়া।

আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন তরফদার জানান, রনিয়া গ্রামের পাঁচ যুবক হাওরে মাছ ধরতে গিয়েছিল। দুপুরে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হয় বাকি তিনজন। আহত ব্যক্তিরা হলেন মাহবুব মিয়া (১৪), পলাশ মিয়া (১৫) ও আল আমিন (১৮)।

অপরদিকে, নূরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফারুক মিয়া জানান, সকালে আছকির মিয়ার ছেলে বিলে মাছ ধরতে গিয়েছিল। সকাল ১০টার দিকে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে তিনি ছেলেকে আনতে যান। এ সময় বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু ঘটে।

এর আগে গত ৪ জুন হবিগঞ্জে বজ্রপাতে তিনজন নিহত হয়েছিল।

এস এম উমেদ আলী, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় পৃথক দুটি স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের গল্লাসাঙ্গনে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আব্দুল মতিন নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়।

অপরদিকে একই উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের কাজিরবন এলাকায় মাছ ধরতে গেলে বজ্রপাতে রুবেল মিয়া নামের আরো একজনের মৃত্যু হয়।

বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হক বিষয়ট নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পৃথক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

মোস্তাফিজ আমিন, ভৈরব : কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলায় বজ্রপাতে সেলিম মিয়া (২৮) ও কামরুল খন্দকার (১৪) নামের দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। সকালে মাছ শিকার করতে গিয়ে তাদের মৃত্যু হয়।

সেলিম মিয়া ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর গ্রামের আহসানউল্লাহ মিয়া এবং কামরুল খন্দকার কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের বড়ছয়সূতি গ্রামের হারুন খন্দকারের ছেলে।

এলাকাবাসী জানায়, পেশায় জেলে সেলিম মিয়া প্রতিদিনের মতো সকাল ১০টার দিকে মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে যান। এ সময় বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসেন।

অপরদিকে একই দিন সকাল ৬টার দিকে কামরুল খন্দকার বাড়ির পাশের ডোবায় মাছ ধরতে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে।

দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম মঞ্জু মিয়া (৩৫)। তিনি উপজেলার সেলবরস ইউনিয়নের সলফ গ্রামের ফুলচান মিয়ার ছেলে।।

নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলায় বাড়ির পাশে জলধরা হাওরে নৌকা দিয়ে মাছ ধরতে যান মঞ্জু মিয়া। এমন সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে তিনি আহত হন। তাঁকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ধর্মপাশা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, সকালে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে ওই কৃষকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের মরদেহ পরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।