বজ্রপাতে ছয় জেলায় ৯ জনের মৃত্যু
বজ্রপাতে দেশের ছয় জেলা হবিগঞ্জ, জয়পুরহাট, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, কুষ্টিয়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আজ বৃহস্পতিবার ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে বজ্রপাতে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় দুইজনের মুত্যু হয়েছে। তারা হলো- নোয়াওই গ্রামের দরদ মিয়ার ছেলে ওরকাইদ (১১) ও মানিকা গ্রামের আব্দুল সালামের ছেলে নছর উদ্দিন (১৭)।
বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান জানান, সকাল ৮টায় ওরকাইদ বাড়ির পাশে একটি বিলে মাছ ধরতে যায়। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে ওরকাইদ মারা যায়। আহত হয় জুনাইদ ও তার বন্ধু উসমান। আহতদেরকে বাহুবল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে একই উপজেলার মানিকা গ্রামের নছর উদ্দিনসকাল ৬টায় জারিয়া বিলে মাছ ধরতে যায়। সকাল ৯টায় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। এ ব্যাপারে দুটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
জয়পুরহাটে টিউবওয়েলে গোসল করার সময় বজ্রপাতে সদর উপজেলার মোহাম্মদাবাদ ইউনিয়নের পারুলিয়া-গনকবাড়ি এলাকায় সুকুমার চন্দ্র সরকার (৫১) নামে এক কৃষকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
দুপুরে মাঠের কৃষি কাজ শেষে নিজ বাড়িতে ফিরে বিকেল ৩টার দিকে সুকুমার চন্দ্র সরকার বাড়ির পাশে নলকূপে গোসল করতে যান। আকস্মিক বজ্রপাতে সুকুমার চন্দ্র সরকারের শরীর মারাত্মকভাবে ঝলসে গেলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
সুকুমার চন্দ্র সরকার সদর উপজেলার পারুলিয়া-গণকবাড়ি গ্রামের মৃত রাজেন্দ্রনাথ সরকারের ছেলে।
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে তকবির হোসেন (১৩) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। দিরাই উপজেলার মিলনগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তকবির হোসেন দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের ললুয়ারচর গ্রামের খালেক মিয়ার ছেলে।
এলাকাবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টার সময় কিশোর তকবির হোসেন মাছ ধরাতে মিলনগঞ্জ বাজারের পাশে হাওরে যায়। এ সময় হঠাৎ তার উপর বজ্রপাত ঘটলে সে আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহতাবস্থায় তকবির হোসেনকে উদ্ধার করে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে বগুড়ার কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের এরুইল বাজারে বজ্রপাতে মোকলেছার রহমান (৫৫) নামের এক কৃষক মারা গেছেন। তিনি এরুইল মধ্যাপাড়ার মৃত কছিমুদ্দিনের পুত্র। এ ঘটনায় তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে কাহালু থানার ওসি মো. জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, বিকেলে সোয়া ৩টায় বাড়ির পাশের পাকা রাস্তার ওপর ধানের বস্তা ভরানোর কাজ করছিলেন মোকলেছার। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
এরুইল মধ্যাপাড়া মোহসিনের ছেলে মনা (৩৫), একই গ্রামের হাসান আলী (৪০) ও এরুইল বাজারের ব্যবসায়ী মো. মামুন (৩২) আহত হন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বজ্রপাতে দুজন মারা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিকেলে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের ঘোষপুর ও নন্দলালপুর ইউনিয়নের সদরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
মৃতরা হলেন- সাদিপুর ইউনিয়নের ঘোষপুর গ্রামের হামিদুল মণ্ডলের ছেলে ফারুক মণ্ডল (৩০) ও নন্দলালপুর ইউনিয়নের সদরপুর গ্রামের ময়েজ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে শফি মণ্ডল (৪৫)।
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন জানান, বিকেলে ৩টার দিকে গরু চড়ানো অবস্থায় বজ্রপাত মারা যান ফারুক।। অন্যদিকে বিকেল ৫টার দিকে মাঠে ধান আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কৃষক শফি মণ্ডলের মৃত্যু হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় আলাদা বজ্রপাতের ঘটনায় এক নারীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
তারা হলেন- সদর উপজেলার স্বরুপনগর এলাকার গোলাম মোস্তফার ছেলে শহিদুল ইসলাম (২৫) ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চর পাঁকা গ্রামের হেরাস উদ্দীনের স্ত্রী পাপিয়া বেগম (৩৫)।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর হোসেন জানান, আজ বিকেলে এলাকার একটি মাঠ থেকে ঘাস কেটে বাড়ি ফেরার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মারা যান শহিদুল ইসলাম।
অন্যদিকে প্রায় একই সময়ে বাড়ির উঠানে কাজ করার সময় বজ্রপাত হলে গুরুতর আহত হন পাপিয়া বেগম।। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি।