‘ফ্ল্যাটে দেহ ব্যবসা ও লেনদেনের জেরে’ মিরপুরে দুই নারী খুন
মিরপুর-২ নম্বর সেকশনের যে বাসায় বৃদ্ধা ও গৃহকর্মীকে ‘শ্বাসরোধে হত্যা’ করা হয়েছে সেই ফ্ল্যাটটিতে অনেক অপরিচিত তরুণ-তরুণীর আনাগোনা ছিল এবং টাকা লেনদেনের মাধ্যমে সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপ চলত বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) খাইরুল আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অসামাজিক কর্মকাণ্ডের টাকার ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে এই খুন হতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।’
গতকাল মঙ্গলবার রাতে মিরপুর-২ নম্বর সেকশনের ২ নম্বর রোডের ‘এ’ ব্লকের ১১ নম্বর বাসার চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে রহিমা বেগম (৬০) ও তাঁর গৃহকর্মী সুমি আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সেখানে ক্রাইম সিনের সদস্যরা গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেন। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানায়, ওই ফ্ল্যাটে মাঝেমধ্যে রহিমার দ্বিতীয় স্বামী কুদ্দুস মিয়া ও কথিত ছেলে সোহেল আসা-যাওয়া করতেন। গত রোববার সুমি এই বাসায় কাজে যোগ দেয়। রহিমা ছয় মাস আগে এই ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তদন্ত শুরু করেছে।
আজ বুধবার দুপুরে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপির এসি খাইরুল আলম। তিনি বলেন, রহিমার কথিত ছেলে সোহেলকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখনো তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
রহিমার মেয়ে রাশেদা বেগম পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জে থাকেন। সোহেল ফোন করে রহিমাকে মায়ের মৃত্যুর খবর দেন। রাশেদা নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অজ্ঞাত আসামিদের কথা বলা হয়েছে বলেও মিরপুর মডেল থানা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
মিরপুর জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) খাইরুল আলম আরো বলেন, ‘স্থানীয় মানুষজন আমাদের জানিয়েছেন, ওই বাসায় সবসময় অপরিচিত তরুণ-তরুণী আসা-যাওয়া করত। সেখানে অসামাজিক কাজ করাতেন রহিমা নামের ওই নারী। সেই কাজের টাকার ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে এই খুন হতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।’
দুজনকেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ঘরের দরজা খুলে আমরা দুজনকেই মৃত অবস্থায় দেখতে পাই। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। যখন লাশ উদ্ধার করা হয় তখন ওই বাসার ভেতরে জিনিসপত্র এলোমেলো করা ছিল।’
মিরপুর জোনের উপকমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ এ ব্যাপারে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটা অবশ্যই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনায় সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ছাড়া সংশিষ্ট আরো কয়েকজনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আশা করছি, প্রকৃত ঘটনা দ্রুতই জানা যাবে।’