‘ফিরোজা’তেই চলবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা
টানা দুই বছরের বেশি সময় কারাভোগ, যার নয় মাসই কেটেছে হাসপাতালে চিকিৎসায়। শেষ পর্যন্ত শারীরিক অবস্থার কারণেই নির্বাহী আদেশে মুক্তি। ফিরলেন নিজ বাসায়। এখন থেকে সেখানেই চলবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নিয়মিত ব্যবহার করা গাড়িটিতে না চড়ে খালেদা জিয়াকে বাসায় ফিরতে হয় প্রাইভেটকারে। কারণ, ওই গাড়িতে ওঠার মতো শারীরিক অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া। আর গাড়িতে বসা অবস্থায় বাঁ হাতে টাওয়েল মুড়িয়ে রাখার দৃশ্য নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মনে জন্ম দেয় শঙ্কার।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘অন্যের সাহায্য ছাড়া উনি চলতে পারেন না, হাঁটতে পারেন না, ব্যক্তিগত কোনো কাজ করতে পারেন না। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ যে মেডিকেল সনদ দিয়েছে, তাতেও তা লেখা আছে। উনার বড় বোন যখন দেখা করতেন, তখনো উনারা বলতেন যে বাঁ হাত দিয়ে উনি কিছু ধরতে পারেন না। সে জন্য উনার বাঁ হাতটা টাওয়েল দিয়ে প্যাঁচানো, যেটি দেখেছেন সেটি হলো উনার বাঁ হাতে যে অবস্থা বিশেষ করে কবজির নিচে, সে জন্য তা ঢাকা দেখেছেন।’
ফিরোজায় ফেরার পর মুক্তির স্বস্তি থাকলেও সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। মুক্তির শর্ত অনুযায়ী তাঁকে এখন চিকিৎসা নিতে হবে বাসায়। আর এই চিকিৎসার জন্য রয়েছে ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসা যেটা চলছে, এটার মধ্যে পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করার জন্য মেডিকেল বোর্ড পরামর্শ দিয়েছে। পরামর্শ দেওয়াতে যেটা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ, সেই চিকিৎসা উনি গ্রহণও করেছেন। চিকিৎসকেরা খুব আশাবাদী। পরিবর্তনটা এক-দুদিনে বোঝা যাবে না। এর জন্য দেড় থেকে দুই সপ্তাহ সময় অপেক্ষা করতে হবে।’
খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে উল্লেখ করে ডাক্তার জাহিদ হোসেন বলেন, ‘১৪ দিনের সেলফ কোয়ারেন্টিন শেষ হলেই নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে তাঁর স্বাস্থ্যের।’
জাহিদ হোসেন আরো বলেন, ‘উনার বাসাটাকে একটা হাসপাতাল হিসেবে কীভাবে আমরা গড়ে তুলতে পারি, যেখানে উনার চিকিৎসার জন্য যা প্রয়োজন সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থাকে, জাতীয়তাবাদী দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সে ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে।’
বৈশ্বিক করোনা মহামারি ও দেশে এর সংক্রমণ শুরু হওয়ায় মুক্তির পরই চিকিৎসকদের পরামর্শে ১৪ দিনের সেলফ কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাই জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসক ছাড়া আর কেউ যেতে পারছেন না ফিরোজা ভবনে।