ফরিদপুরের দুই হাজার কোটি টাকার পাচার মামলার অভিযোগপত্র ২ মাসের মধ্যে
‘জমি দিবি নাকি দখল করব’-এমন হুমকি দিয়েই কয়েক হাজার বিঘা জমির মালিক হয়েছেন ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল। হাতুড়ি ও হেলমেট বাহিনীর প্রভাবে বাগিয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকা মূল্যের টেন্ডার। এই দুটি ক্ষেত্রেই যোগসাজস রয়েছে এক শ্রেণির সরকারি অসাধু কর্মকর্তাদের।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো ২৫ জনের নাম এসেছে। কমিশনভোগী গডফাদারদের তথ্যও দিয়েছেন তারা।
ফরিদপুর শহরের ধলার মোড় থেকে ট্রলারে চরে যেতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। সেখানে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক বরকত ও তাঁর ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি রুবেল দখল করেছেন ১১২ একরেরও বেশি জমি। গড়েছেন মালটা, নারিকেল আর কলা বাগান। আছে হাঁস, মুরগি ও গরুর খামার।
ফরিদপুর বাইপাস সড়কের দুই পাশে যেদিকে দুচোখ যায় শতশত একর জমির মালিক বনে গেছেন রুবেল ও বরকত। কোনো জমি কিনেছেন পানির দামে আবার কোনটা জোর করে হেবা দলিল করিয়ে।
এদিকে কয়েক বছরে বাগিয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকার টেন্ডার। গ্রেপ্তারের পর বিতর্কের মুখে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের ২৫টি টেন্ডারের কার্যাদেশ বাতিল করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। আরো বাতিলের অপেক্ষায় রয়েছে ১৩টি কার্যাদেশ। যা এই মাসের মধ্যে বাতিল করা হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, রুবেল ও বরকতের সহযোগী ও নির্দেশদাতা আরো যেসব লুটেরা রয়েছে তাদের জেলাসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি অফিসের কাজের কার্যাদেশ বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছেন ফরিদপুরের বিশিষ্টজনরা।
সিআইডি বলেছে, বরকত-রুবেলসহ গ্রেপ্তার নয়জন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো ২৫ জনের নাম উঠে এসেছে। তাদের সম্পৃক্ততা এখন যাচাই করছে তারা।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি রেজায়ল হায়দার বলেন, ‘কাছের দিক দিয়েই আছে প্রায় ২৫ থেকে ২৬ জন। যাদের নাম ঘুরে ফিরেই আসছে। সব ঠিক থাকলে দুই মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের আলোচিত এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হবে।’