ফরাসি সাপের বিষসহ আটক ২
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা থেকে সাপের বিষসহ পাচারকারীচক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বুধবার রাতে তাদের আটক করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার।
শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, ‘কালিয়াকৈর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামুন তালুকদার (৫১) ও তার সহযোগী মো. মামুনকে (৩৩) আটক করা হয়। আটককালে তাদের কাছে দুটি বড় লকার ও ছয়টি কাচের কৌটায় সংরক্ষিত সাপের বিষ উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য আমরা ৯ কোটি টাকা হিসেবে ধরছি।’
সিআইডির ডিআইজি বলেন, ‘প্রত্যেকটি কৌটার গায়ে লেখা, COBRA Snake Poison of France, Red Dragon Company, Cobra Code No-80975, Made in France। আমরা ধারণা করছি, বিষগুলো বিদেশি। বাংলাদেশকে থেকে অন্য দেশে পাচার হয়ে যাবে এগুলো। কারণ, বাংলাদেশে সাপের বিষ ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো বৈধতা নেই। আমাদের ধারণা, সাপের বিষ পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল পাচারকারীরা।’
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গত ১৭ সেপ্টেম্বর সিআইডি ঢাকা মেট্রোর একটি টিম গাজীপুরের বাসন থানা এলাকা থেকে সাপের বিষ ক্রয়-বিক্রয় ও পাচারকারী একটি চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওই মামলার তদন্তকালে আমরা জানতে পারি, আরেকটি বড় পাচারকারী চক্র আছে। তারপর থেকে আমরা অধিকতর তদন্ত শুরু করি। অনেকদিন তদন্তের পর আমরা গতকাল ওই অভিযান পরিচালনা করি। ইতোমধ্যে কয়েকটি চালান বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়ার তথ্য পেয়েছে সিআইডি।’
বাংলাদেশ থেকে কোন দেশে বিষগুলো কোন দেশে যেত-এমন প্রশ্নে রেজাউল হায়দার বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সাপের বিষ পাচার হয়। এটার বৈশ্বিক মার্কেট রয়েছে, তবে বাংলাদেশে বিক্রির কোনো বৈধতা নেই। এছাড়া এ বিষয়ে আমরা আরো তদন্ত করে দেখছি। কারণ, দেখা যাবে শেষমেশ বিষগুলো কোথায় যাবে তা গ্রেপ্তারকৃতরা নাও জানতে পারে। এরপরও হয়তো দুই-তিন হাত ঘুরে এগুলো শেষ গন্তব্যস্থলে যাবে।’
সিআইডির ডিআইজি বলেন, ‘সাপের বিষ ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালে যেহেতু এটা ব্যবহারের বৈধতা নেই। আমরা এখনো নিশ্চিত না যে এটা ঠিক কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। এটা এলসির মাধ্যমে আনা হয়নি। তবে জব্দ করা বিষের কনটেইনারগুলোতে লেখা দেখা গেছে ‘মেড ইন ফ্রান্স’।
যেহেতু সাপের বিষ লেনদেন ক্রয়-বিক্রয় এবং পাচার আইনত অপরাধ, তাই তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হবে বলেও জানান রেজাউল হায়দার।