প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ, চেয়ারম্যান-ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর
এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অনিয়মের অভিযোগে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এই বিক্ষোভ। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন খান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামানের গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা।
বিক্ষোভের একপর্যায়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, প্রবেশপত্র ও সনদ বিতরণের সময় টাকা নেওয়া, নিয়োগে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এর আগে গত শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। ওই সময় বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেয় প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় সোমবার বিকেলে ফের আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনায় বসেন উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন খান, ইউএনও আসাদুজ্জামানসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা।
পরে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে বর্তমান শিক্ষার্থীসহ সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলিবর্ষণ করে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গতকাল বিকেলে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও বিদ্যালয়ে যান। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।’
ইউএনও আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তিন দিন ধরে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছে। গতকাল বিকেলে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে নিয়ে এলাকায় যাই। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করি। কিন্তু শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী প্রশাসনের আশ্বাস মেনে নেয়নি। পরে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা আমাদের অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।’