পর্বতারোহী রত্নাকে গাড়িচাপা দেওয়া চালকের স্বীকারোক্তি
পর্বতারোহী রেশমা নাহার রত্নাকে গাড়িচাপা দেওয়া চালক মো. নাঈম (২৭) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে চালক নাঈম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
এর আগে আজ দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোবারক আলী আসামি নাঈমকে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নাঈম স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হলে বিচারক তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট নাঈমকে দুদিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরপরে রিমান্ড শেষ হলে গত ২২ আগস্ট কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ১৮ আগস্ট রাজধানী ঢাকার ইব্রাহিমপুর থেকে কালো রঙের মাইক্রোবাসসহ চালক নাঈমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৭ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানের পাশে লেক রোডে বাইসাইকেল আরোহী রেশমা নাহার রত্নাকে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা দিলে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁর এক স্বজন মামলা করেন।
রেশমা নাহার রত্না রাজধানীর আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তিনি রাজধানীর মিরপুরের পাইকপাড়ায় সরকারি কোয়ার্টারে থাকতেন। তিনি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বীরবিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেনের সন্তান। লোহাগড়া আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ইডেন কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক পাস করেন। পর্বতারোহণের ওপর তিনি ভারতের উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশিতে অবস্থিত নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে বি.এমসি কোর্সে পড়াশোনা করেন।
রত্না দীর্ঘদিন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পাঠচক্রের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। দেশে-বিদেশে বেশ কটি হাফ-ম্যারাথন দৌড়ানোর পর নিজেকে ফুল ম্যারাথনে দৌড়ানোর জন্য প্রস্তুত করছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল এভারেস্ট জয়ের। কিন্তু তার আগেই নাঈমের গাড়িচাপায় শেষ হয়ে যায় সেই স্বপ্ন।
এ ঘটনার পর ট্রাভেলার, সাইক্লিস্টসহ বিভিন্ন মহল মাইক্রোবাস চালককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।