‘না খেয়ে মরতে রাজি, কিন্তু বাস চালাব না’
নয় দফা দাবিতে আজ বুধবার সকাল থেকে সিরাজগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি বাস ও সিএনজি চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে জেলার এম এ মতিন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কথা হয় বাসচালক বাবু শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘না খেয়ে মরতে রাজি আছি, কিন্তু বাস চালাতে রাজি নই। সড়ক দুর্ঘটনা ইচ্ছে করে হয় না, হঠাৎ করেই হয়ে থাকে। কিন্তু সরকার যে আইন করেছে, তাতে শ্রমিকরা বিপদে পড়েছে। জরিমানা ও জেলের বিধান রাখা হয়েছে। জরিমানার টাকা শ্রমিকরা কোথায় পাবে। এটা মানা সম্ভব না। তাই বাধ্য হয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছি।’
বাসযাত্রী আবুল হোসেন বলেন, ‘শাহজাদপুর কলেজে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছি। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস বন্ধ। এখন তো দেখি যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাস বন্ধের ঘোষণা আগে থেকে থাকলে এ সমস্যায় পড়তে হতো না।’
সিরাজগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল শেখ দুলু বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধনসহ নয় দফা দাবিতে শ্রমিকরা নিজেই থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। তাঁরা মালিকের কাছে গাড়ির চাবি হস্তান্তর করছেন গাড়ি চালাবেন না বলে। শ্রমিকরা না চাইলে তো জোর করে গাড়ি চালানো যাবে না।’
গত রোববার নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের পর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাস শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
আগের আইন কঠোর করে ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে পাস করা হয় ‘সড়ক পরিবহন বিল-২০১৮’। এতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় দায়ীদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এ আইন চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হলেও এটি সম্পর্কে সবার স্বচ্ছ ধারণা না থাকার কারণ দেখিয়ে আরো দুই সপ্তাহ পর গত রোববার থেকে পুরোপুরি কার্যকর করে সরকার। এর পর থেকেই বিভিন্ন জেলায় শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি শুরু করেন।