ভারতের সংসদে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির উত্থাপিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে ফুঁসছে ভারতের আসাম রাজ্য। গতকাল বুধবার ভারতের উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যে বনধ পালিত হয়েছে। এদিকে বিক্ষোভের মধ্যেই গতকাল রাতে আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের বাড়িতে পাথর নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুয়াহাটি শহরজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই রাস্তায় নেমেছেন আন্দোলনকারীরা।

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তাল রয়েছে আসাম। কারফিউ উপেক্ষা করে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছেন। অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতিসহ একাধিক সংগঠন সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আন্দোলনকারীদের থামাতে শহরের রাস্তায় ফ্ল্যাগ মার্চ করছে সেনাবাহিনী।

এদিকে আসামের একাধিক শহরে সড়ক অবরোধের কারণে আটকে পড়েছে বহু যানবাহন। এরই মধ্যে ছয়টিরও বেশি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি নেতাদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভও করছেন তাঁরা। এ ছাড়া রাজ্যের ডিব্রুগড়, সদ্যা, তেজপুরের ডানপন্থী দল আরএসএসের দপ্তরে হামলাও চালানো হয়েছে।

বুধবার রাতে ডিব্রুগড়ে কারফিউ জারি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের বাড়িতে পাথর নিক্ষেপ ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামেশ্বর তেলির বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। একাধিক শহরে বিজেপি ও আরএসএস কার্যালয়ে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে আসাম ও ত্রিপুরায় পাঁচ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। বিক্ষোভ সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর। সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘এরই মধ্যে সেনাসদস্যদের পাঠানো হয়েছে। তারা পুলিশ ও প্রশাসনকে সহায়তা করবে। শান্তি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী ওইসব এলাকায় ফ্ল্যাগ মার্চ করবে।’

বিলের প্রতিবাদে মিছিলে অংশ নেন গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজ ও আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বেশির ভাগ কলেজের শিক্ষার্থীরা। গুয়াহাটি-শিলং সড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা। ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। এ ছাড়া পুলিশের লাঠিতে আহত হয়েছেন বেশকিছু শিক্ষার্থী।

বিক্ষোভের কারণে ডিব্রুগড় ও গুয়াহাটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাবতীয় পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। উত্তর ত্রিপুরায় বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া আগরতলা শহরের উত্তর গেট এলাকায় বিক্ষোভকারীরা অবরোধে নামেন। পুলিশ শতাধিক অবরোধকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।