ধানমণ্ডিতে জোড়া খুন, গৃহকর্মী সুরভীর স্বীকারোক্তি
রাজধানীর ধানমণ্ডিতে গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম (৬৫) ও তাঁর গৃহকর্মী দিতি হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা গৃহকর্মী সুরভী আক্তার নাহিদা ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে তিনি এ স্বীকারোক্তি দেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মো. আশরাফ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. রবিউল আলম আজ আসামি সুরভীকে রিমান্ড শেষে কারাগারে আটক রেখে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন জানান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারকের খাস কামড়ায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুরভী।
এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুরভীসহ পাঁচজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপর আসামিরা হলেন বেলায়েত হোসেন, গাউসুল আযম প্রিন্স, নুরুজ্জামান ও বাচ্চু।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ নভেম্বর রাজধানী ধানমণ্ডির ২৮ নম্বর রোডের বাসায় পুরোনো কাজের লোক আতিকুল হক বাচ্চু একজন নতুন কাজের মেয়েকে বিকেল সাড়ে ৩টায় আফরোজা বেগমের মেয়ে অ্যাডভোকেট দিলরুবা সুলতানা রুবির ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। এরপর তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। আফরোজা বেগম ও তাঁর মেয়ে অ্যাডভোকেট দিলরুবা সুলতানা রুবি পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে দিলরুবা ওই কাজের মেয়েকে তাঁর মায়ের ফ্ল্যাটে কাজের জন্য পাঠান। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দিলরুবা তাঁর মাকে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি। এজন্য দিলরুবা তাঁর বাসার কাজের ছেলে রিয়াজকে মায়ের ফ্ল্যাটে পাঠান। রিয়াজ সেখানে গিয়ে কলিং বেল দেয় এবং ডাকাডাকি করে কোনো শব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দিলে তা খোলা পায়। রিয়াজ আফরোজা বেগমকে ডাইনিং রুমের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে দৌড়ে এসে দিলরুবাকে জানান। দিলরুবা দৌড়ে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পান, ডাইনিং রুমের মেঝেতে আফরোজা বেগম পড়ে আছেন এবং পাশের গেস্টরুমে পুরোনো কাজের মেয়ে দিতির রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। দিলরুবা তার স্বামীকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে তার স্বামী বাসায় ফিরে বাসার সিকিউরিটি গার্ডদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে সিকিউরিটি গার্ড নুরুজ্জামান জানান, নতুন কাজের মেয়েটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ১০ মিনিটের দিকে গেট দিয়ে বের হয়ে চলে গেছে।
সুরভী আক্তার নাহিদা ও অপরাপর আসামিরা যোগসাজসে জোড়া খুনসহ লুণ্ঠনের ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। এ বিষয়ে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে রিমান্ড আবেদনে বলা হয়।
এ ঘটনায় আফরোজা বেগমের মেয়ে অ্যাডভোকেট দিলরুবা সুলতানা রুবি ৩ নভেম্বর ধানমণ্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন।