দুই সিটিতে ভোট পড়েছে ২৭.১৫ শতাংশ
নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ আর দক্ষিণে ২৯ দশমিক ০০২ শতাংশ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ দুই সিটিতে মোট ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান তিনি।
আস্থাহীনতার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম কি না জানতে চাইলে মো. আলমগীর বলেন, ‘অনাস্থার কারণে ভোটে যায়নি, এটা আমার কাছে মনে হয়নি। অনাস্থার কারণে যদি ভোটে না যেত, তাহলে যারা সরকারি দল তাদের তো অন্তত ভোটে অনাস্থা নাই। তাদের যদি সব ভোটার ভোট দিত, তাহলেও তো এত কম ভোট পড়ত না।’
জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, ‘তার মানে হলো, তাদেরও অনেক ভোটার ভোট দিতে যান নাই, যারা সরকারকে সমর্থন করেন। আমি ভোট না দিতে গেলেও সমস্যা নাই, এ ধরনের একটা মনোভাব থেকে হয়তো অনেকেই ভোট দিতে যান নাই। জনগণ ছুটি পেয়েছে, অনেকে ছুটি ভোগ করেছে। কেউ কেউ ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত ছিল।’
ভোটারের উপস্থিতির হার নিয়ে ইসি সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে আলমগীর বলেন, ‘আমরা অসন্তুষ্ট না। প্রচুর প্রচার ছিল। আমাদের ধারণা ছিল, শতকরা ৫০ শতাংশ ভোট পড়বে। কিন্তু তার চেয়ে কম পড়েছে। ভোট কাস্টিংয়ের দিক থেকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট না।’
ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচনে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল। পরিবেশ ভালো ছিল। কোথাও কোনো তেমন গণ্ডগোল হয়নি। কাউকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বায়াস্ট (পক্ষপাতদুষ্ট) ছিল না। সবকিছুই সঠিক ছিল।’
ভোটারদের না আনতে পারার ব্যর্থতা ইসির কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘মোটেই না। কারণ ভোট কেন্দ্রে আসার দায়িত্ব ভোটারের। বিয়ের দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব আমার, কিন্তু দাওয়াতে আসবেন কি না সেটা আপনার ব্যাপার।’
সচিব আরো বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে ভোটের হার অনেক কম। অস্ট্রেলিয়ায় মানুষ ভোট দিতে যায় না। অস্ট্রেলিয়া সরকার ও নির্বাচন কমিশন কী ব্যর্থ? মোটেই না। এ জন্য সেখানে আইন করা হয়েছে যে, ভোট না দিতে আসলে ১০০ ডলার জরিমানা দিতে হবে। তারা ১০০ ডলার জরিমানা দেয়, তারপরও ভোট দিতে যায় না।’
ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কারণ কী বলে মনে করেন-এমন প্রশ্নে মো. আলমগীর বলেন, ‘রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কমিশন নির্বাচনী পর্যালোচনা বৈঠকে বসবে। তখন বিস্তারিত জানা যাবে। এ ছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সুপারিশ থেকে হয়তো ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কারণ জানা যাবে।’
অনেক গোপন কক্ষে আরেকজনের আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা, গোপন কক্ষে গিয়ে একজনের ভোট অন্যজন দেওয়া এবং বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমেও এসব তথ্য এসেছে। এ বিষয়টি কমিশন কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এ অভিযোগটি আমাদের কাছে এসেছে খুবই অল্প মাত্রায় আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে। আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। এছাড়া বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগও আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে শুনেছি। এ বিষয়ে কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেননি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমিশনে লিখিতভাবে এসব অভিযোগ এলে তদন্ত করা হবে, না হলে করা হবে না।’
নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টার অপসারণের ব্যাপারে মো. আলমগীর বলেন, ‘আগামীকালের মধ্যে যে যে প্রার্থী প্রচার করেছেন, তারা নিজ দায়িত্বে পোস্টার অপসারণ করে নিয়ে যাবেন। তা না হলে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, দায়িত্বরত যারা আছেন, তারা সরাতে গেলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং অন্য যে বিধান তাছে, মেনে নিতে হবে।’