তৃতীয় সাবমেরিন কেবল প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ৬৯৩ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা। দেশের পর্যটন জেলা কক্সবাজারকে প্রকল্প এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম জানান, আজ তিন মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় দুই হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা (এখানে তিন সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় শুধু যোগ করা) ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে এক হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং বাকি ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিশ্বব্যাংক ও চীনের কাছ থেকে বিদেশি ঋণ হিসেবে আসবে।
পরিকল্পনা কমিশনের আরেক সদস্য মো. মামুন-আল-রশিদ ৬৯৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার সাবমেরিন কেবল প্রকল্পটি সম্পর্কে জানান যে বাংলাদেশ সাবমেরিন কোম্পানি লিমিটেড ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
মামুন-আল-রশিদ বলেন, তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপিত হলে দেশের ব্যান্ডউইথ প্রতি সেকেন্ডে ছয় টেরাবাইট বৃদ্ধি পাবে। দেশের প্রথম সাবমেরিন কেবলের মেয়াদ ২০২৫ সালে উত্তীর্ণ হয়ে যাবে। তাই নতুন প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। আর প্রথম কেবলটি ১৫ বছরের পুরোনো হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণের কারণে সেবা বিঘ্নিত হওয়ার হার বেড়েছে।
প্রথম সাবমেরিন কেবল সি-মি-উই-৪ ২০০৫ সালে এবং দ্বিতীয়টি সি-মি-উই-৫ ২০১৭ সালে চালু হয়।
তৃতীয় সাবমেরিন কেবল প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ-৬ (সি-মি-উই-৬) কেবলে যুক্ত হবে। এটি সিঙ্গাপুর থেকে ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগর হয়ে ফ্রান্স পর্যন্ত প্রসারিত থাকবে। কেবলটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিসর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের শাখাটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারের কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
মূল প্রকল্পের মধ্যে থাকছে ১৩ হাজার ২৭৫ কিলোমিটারের মূল সাবমেরিন কেবল এবং এক হাজার ৮৫০ কিলোমিটারের শাখা সাবমেরিন কেবল বসানো। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওর, বিল ও চরসহ দেশের সব দূরবর্তী এলাকায় সেবা প্রসারিত করতে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডকে (বিটিসিএল) নির্দেশ দেন বলে জানান মামুন-আল-রশিদ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো অঞ্চল বিটিসিএল কাভারেজের বাইরে থাকা উচিত নয়।