ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কী পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রাজধানীর বায়ুদূষণ পরিস্থিতির যেন আর অবনতি না হয় সে বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে পরিবেশ অধিদপ্তর। সেখানে হাইকোর্টের নির্দেশে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তার অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।
আজ আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫৬০টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৪৭১টি বন্ধ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। ১৮টি প্যারালাইসিস ব্যাটারি রিসাইকেলিং বন্ধ করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৭০ শতাংশ বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫২টি মামলা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ যানবাহনের ওপর দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।
ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি রিটের এক শুনানি শেষে বায়ুদূষণ রোধে নয় দফা নির্দেশনা দেন আদালত।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ঢাকা শহরের মধ্যে যেসব ট্রাক বা অন্যান্য যানবাহনে বালি বা মাটি পরিবহন করা হয়, সেগুলো কাভার্ড (ঢাকনা) যুক্ত করতে হবে।
২. যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলে সেসব স্থানে ঠিকাদারদের ঢাকনা দিয়ে নির্মাণকাজ পরিচালনা করতে হবে।
৩. ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণকাজ এবং কার্পেটিংয়ের যেসব কাজ চলছে, সেসব কাজ যেন আইনকানুন এবং চুক্তির শর্ত মেনে করা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. যেসব গাড়ির কলো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে হবে।
৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরোনো হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইক্লিং বন্ধ করতে হবে।
৯. মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রেখে মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে তা অপসারণ করতে হবে।