নতুন সড়ক পরিবহন -২০১৮ অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতিত গাড়ি চালালে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। এ কারণে অনেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে দৌঁড়ঝাপ দিচ্ছেন। নতুন আইন অনুসারে ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরযান চালনার উপর বিধি-নিষেধ রয়েছে। এনটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য নতুন আইনে কারা ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো।  

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার প্রথমত হলো বয়স। সেক্ষেত্রে অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে বয়স অন্যূন ১৮  বৎসর এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে বয়স অন্যূন ২১  বৎসর হতে হবে। এরপর  ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির পরবর্তী  শর্ত হলো চালককে অবশ্যই অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম হতে হবে। মোটরযান চালনার যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

নতুন আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি ড্রাইভিং লাইসেন্স বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স ব্যবহার করে পাবলিক প্লেসে কোনো মোটরযান চালাতে বা চালাবার অনুমতি পাবে না। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি যে শ্রেণি বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালনার লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন সেই শ্রেণি বা ক্যাটাগরি ব্যতীত অন্য কোনো শ্রেণি বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালাতে পারবেন না । তবে ভারি যানের ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী কোনো ব্যক্তি হালকা ও মধ্যম শ্রেণি বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালাতে পারবেন।

প্রতিরক্ষা বাহিনীর ড্রাইভিং লাইসেন্স

প্রতিরক্ষা বাহিনীর মোটরযান চালাবার জন্যও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা বাহিনীর মোটরযান চালাবার জন্য সংশ্লিষ্ট বাহিনীর নিজ নিজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিজস্ব পদ্ধতিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা যাবে এবং ওই ড্রাইভিং লাইসেন্স সমগ্র বাংলাদেশে মোটরযান চালনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

তবে শর্ত থাকে যে, ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত মোটরযান ইহার আওতা বহির্ভূত থাকবে। প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত কোনো ব্যক্তির অন্যূন ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদী সংশ্লিষ্ট বাহিনী কর্তৃক প্রদত্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে, কর্তৃপক্ষ যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা গ্রহণ ব্যতীত ধারা ৬-এর উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে, তাহাকে ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রেণির ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করতে পারবে।

বিদেশি নাগরিকের ড্রাইভিং লাইসেন্স

বিদেশি নাগরিকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে যে কোনো বিদেশি নাগরিক তাহার নিজ দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন ও পৃষ্ঠাঙ্কন করে ওই লাইসেন্সের মেয়াদকালে সমগ্র বাংলাদেশে মোটরযান চালনা করিতে পারবেন। এছাড়া যে কোনো বিদেশি নাগরিক ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য, নির্ধারিত ফিস প্রদান সাপেক্ষে, নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে পারবেন এবং এ ধরণের কোনো আবেদন করা হলে, তাকে এই আইনের অধীন ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা যাবে।

নতুন সড়ক আইনে কোনো বিদেশি নাগরিক এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধান বা লাইসেন্সে প্রদত্ত কোনো শর্ত লঙ্ঘন করলে, কর্তৃপক্ষ তার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্থগিত, রহিত বা বাতিল করিতে পারবে বা পৃষ্ঠাঙ্কিত বিদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স অকার্যকর করতে পারবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে কোনো মোটরযান চালনা করিতে পারবেন না।