জাহালমের ক্ষতিপূরণের রায় ২৯ সেপ্টেম্বর
ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতি মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের সালেকের বদলে টাঙ্গাইলের জাহালমকে আটকের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের রায়ের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর দিন রেখেছেন হাইকোর্ট। এর আগে শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের কার্যতালিকায় মামলাটি রায়ের জন্য ১ নম্বরে রাখা হয়েছে। ওই মামলাসহ পাঁচটি মামলার রায়ের জন্য বেঞ্চটি গঠন করা হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত বেঞ্চটি বসবেন।
আজ বুধবার মামলার দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘আজকে কজলিস্ট দেখলাম মামলাটি রায়ের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর এক নম্বর আইটেম হিসেবে রাখা হয়েছে।’
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রুলের ওপর শুনানি শেষে মামলাটি সিএভি রাখা হয়েছিল। অর্থাৎ যে কোনো দিন রায় ঘোষণার জন্য রাখা হয়।
শুনানিতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালের ১০ এপ্রিল ধানমন্ডি থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেয় দুদক। পরে অধিকতর তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তদন্তকালে গ্রেপ্তার মানিকগঞ্জের টেটামার বড়াইদিয়ারা গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম ওরফে সফদার হোসেন ওরফে সাগর আহম্মদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তার জবানবন্দিতে ১০টি ব্যাংক থেকে ২০ কোটি টাকা আত্মসাত করার বর্ণনা দেওয়া হয়।
এরই সূত্র ধরে মানিকগঞ্জের উত্তরকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত শামসুল হক বাচ্চুর ছেলে আমিনুল হক সরদারকে আসামি করে দুদক অভিযোগপত্র দেয়। ওই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এরপর গতবছর পহেলা এপ্রিল ঢাকার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আমিনুল। সেই থেকে তিনি কারাবন্দি। এ অবস্থায় ধানমন্ডি ও রামপুরা থানার মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে গত ২০ জানুয়ারি ও ১০ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন। এরপর হাইকোর্টে আবেদন করেন আমিনুল। তাঁর আবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪টি মামলায় জামিনে রয়েছেন।
'৩৩ মামলায় ভুল আসামি জেলে' শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিরাপরাধ জাহালমকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এই প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনার পর আদালত গতবছর ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট টাঙ্গাইলের পাটকল শ্রমিক জাহালমকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন এবং তাকে কারামুক্তির নির্দেশ দেন। সেদিন রাতেই জাহালমকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।