ছাত্রলীগের পদের জন্য ২০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ
মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদের জন্য ২০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মহির বিরুদ্ধে।
বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বারবার একটি লিখিত অভিযোগও করেছেন পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতা মাহতাবুর আলম জাপ্পি। তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলছে, যারা পদের জন্য টাকা দিয়েছে বা নিয়েছে উভয়ের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর শুরুটা হবে যে টাকা দিয়েছে তাকে দিয়ে।
মাহতাবুর আলম জাপ্পি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে যে অভিযোগটি পাঠিয়েছেন সেটি এনটিভির হাতে রয়েছে। অভিযোগটি করা হয়েছে, গত ২৭ জুলাই। অভিযোগে তিনি ন্যায়বিচার প্রার্থনা করে বলেছেন, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক পদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য জেলা সভাপতিকে ১১ লাখ টাকা আর সাধারণ সম্পাদককে ৯ লাখ টাকা দেন। এই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে ও নগদে লেনদেন হয়েছে।
আজ বুধবার রাতে এনটিভি অনলাইনকে মুঠোফোনে পদপ্রত্যাশী ও অভিযোগকারী ছাত্রলীগ নেতা মাহতাবুর আলম জাপ্পি বলেন, ‘আমাকে মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বানানোর কথা বলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন। আমার আমেরিকা প্রবাসী বড় ভাই শাহীনের কাছ থেকে তারা এই টাকা নিয়েছেন।’
‘আমি জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতাম। সেই সুবাদে আমার পরিবারের সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সম্পর্ক তৈরি হয়। তাঁরা আমার প্রবাসী বড় ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তাঁরা আমার বড় ভাইকে বলেন, ২০ লাখ টাকা দিলে জাপ্পিকে মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বানানো হবে। তাদের কথামতো আমার ভাই সরল বিশ্বাসে ২০ লাখ টাকা দেন।’
মাহতাবুর আলম জাপ্পি আরো দাবি করেন, ‘আমার প্রবাসী ভাই প্রথমে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমানের এক আত্মীয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই বছরের মে মাসের ১৮ তারিখে সাত হাজার ৮০০ ডলার দেন। এরপর সাইদুরের ডাচ বাংলা ব্যাংকের হিসাব নম্বরে (১৮৭১৫১০০৫০৮৯৫) আরো দুই লাখ টাকা দেন। সবশেষে নগদে আরো ৫০ হাজার টাকা দেন।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘‘আমি কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি।’
ব্যাংকের টাকার রশিদ আর অডিও কথোপকথনের বিষয়ে জানানো হলে সাইদুল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মহি এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইকে বলেন, ‘‘আমি কোনো টাকা নেইনি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদেরকে হেয় করা হচ্ছে।’
তবে লেনদেনের চেক থাকা আর সভাপতি সাইদুর রহমানের টাকা নেওয়া বিষয়ে মহিবুর রহমান মহি বলেন, ‘ওটা তার ব্যাপার সে দেখবে।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এনটিভি অনলাইকে বলেন, ‘‘টাকা দিয়ে কখনো ছাত্রলীগের পদ পাওয়া যায় না। যারা মুজিব আদর্শের সৈনিক তাদের কর্মের উপর ভিত্তি করেই পদ দেওয়া হয়। হবিগঞ্জে উপজেলা ছাত্রলীগের বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। আরো তথ্য সংগ্রহ করছি। এরপর আমরা ব্যবস্থা নেব। যদি প্রমাণিত হয় কেউ পদের জন্য টাকা দিয়েছে বা নিয়েছে তবে উভয়ের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর শুরুটা হবে যে টাকা দিয়েছে তাকে দিয়ে।’