চেকপোস্ট বসিয়েও মানুষের স্রোত ঠেকানো যাচ্ছে না
সাভারে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সংযোগ পয়েন্টগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের স্রোত ঠেকাতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
রাজধানীর গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে সুনসান নিরবতা থাকলেও পায়ে হেঁটে আমিনবাজার সেতু পার হয়ে লোকাল বাস কিংবা অটোতে চেপে গ্রামের বাড়ির পথ ধরেছেন অসংখ্য মানুষ। যে যেভাবে পারছে মরিয়া হয়ে ছুটছে গ্রামের পথে।
সামাজিক দূরত্বের সরকারি বিধিনিষেধ না মেনে অ্যাম্বুলেন্সে গাদাগাদি করে ১৪ জন যাত্রী নিয়ে আরিচা ঘাটে যাওয়ার পথে সাভারে একটি অ্যাম্বুলেন্স জব্দ করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্সটির চালক মো. সিরাজুলকে (৩২)।
সাভারের ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) আব্দুস সালাম বলেন, ‘গ্রামের পথে ছুটে চলা বেপরোয়া মানুষ কোনো বাধাই তোয়াক্কা করছেন না। মানছেন না ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি। মানুষকে সচেতন করতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়েও কার্যকর কোনো ফল মিলছে না।’
পুলিশ চেকপোস্টের অংশটুকু পায়ে হেঁটে অতিক্রম করে কখনো বা মূল সড়ক এড়িয়ে সরু গলি, কাদামাখা পথ মাড়িয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় গ্রামের পথ ধরেছেন অসংখ্য মানুষ। এর মধ্যে নারী ও শিশুদের দুর্ভোগ সীমা ছাড়িয়েছে।
কেউ রিকশা, কেউ কাভার্ডভ্যান, কেউবা ট্রাকে করেই ধরেছেন গন্তব্যের পথ।
অন্যদিকে, সামর্থ্যবান মানুষজনের ব্যক্তিগত যানবাহনে গ্রামের বাড়ি ফেরার পাল্লায় মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে যানজটের।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা পুলিশ চেকপোস্ট এড়াতে অসংখ্য মানুষ মানিকগঞ্জ হয়ে আরিচা ঘাট ও পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছাতে সিংগাইরের পথ ধরেছেন। ঘাটের প্রবেশমুখে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করেও ফল মিলছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ছয় মাসের শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে স্বামী ও অপর দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের পথ ধরা রোকসানা আক্তার জানান, মঙ্গলবার সকালে ঝোড়ো হাওয়ার মধ্যেই রাজধানীর শেখেরটেক থেকে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের উদ্দেশে বেড়িয়েছেন তাঁরা।
রোকসানা আক্তার বলেন, ‘আমাগো এক পায়ে ডর, অন্য পায়ে আনন্দ। পাটুরিয়া পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলেই আর চিন্তা নাই।’
পথের অনিশ্চয়তার ডরভয় উপেক্ষা করেই প্রিয়জনের সান্নিধ্যের আশায় হাজারো দুর্ভোগের মধ্যেও এই যাত্রাকে আনন্দের বলে জানাচ্ছিলেন এই নারী।