চাঞ্চল্যকর শাম্মী হত্যা, আসামির জামিন বাতিলে হাইকোর্টের রুল
চাঞ্চল্যকর শাম্মী আক্তার হত্যা মামলার প্রধান আসামি তাঁর স্বামী মো. আলমগীর হোসেন টিটুকে বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। আদালতে বাদীপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও মহিউদ্দিন আহমেদ।
আজ বুধবার বিষয়টি বাদিপক্ষের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের জানান।
শাম্মী হত্যা মামলা ভিন্ন খাতে স্থানান্তরের বিষয়ে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর জাতীয় একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর সেই প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের দৃষ্টিগোচর করা হয়। আদালত এরপর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে হাজির হয়ে আদালতে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ অনুসারে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নওশের তাঁর ব্যাখ্যা দেন। এরপর আদালত শাম্মীর হত্যা মামলায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার সোহেল মাহমুদকে ব্যাখ্যা দিতে তলব করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সোহেল মাহমুদ আদালতে ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু আদালত তাঁর বক্তব্য বাতিল করে দেন।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ২০১৭ সালের ৭ জুন রাতে রাজধানীর কল্যাণপুরে ভাড়া বাসায় একটি বায়িং হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন টিটু তাঁর স্ত্রী শামিমা লাইলা আরজুমান্না খান শাম্মীকে (শাম্মী আক্তার) অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করেন। পরে চিকিৎসার নামে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ছোট ভাই মো. ফরহাদ হোসেন খান বাবু বাদী হয়ে ৮ জুন মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ঘাতক স্বামী আলমগীর ও তাঁর তৃতীয় স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তাকে গ্রেপ্তার করে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, 'অভিযোগ উঠেছে, আলোচিত এ মামলার তদন্ত নিয়ে গড়িমসি করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মো. নওশের আলী। মামলার বাদী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ঢাকায় অবস্থানরত আসামির ধনাঢ্য ভগ্নিপতি মো. আবদুল বাছেদ অর্থের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন এবং মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহে কাজ করছেন। আর তাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নওশের আলী প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ঘাতক আসামির পক্ষে ভূমিকা রাখছেন।'
পরে ওই প্রতিবেদনের ধারাবাহিকতায় মামলাটি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এরই মধ্যে মামলার প্রধান আসামি মো. আলমগীর হোসেন টিটুকে গত ২৬ জুন জামিন দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর আসামি জামিনে মুক্ত হন। পরে ওই জামিন আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে গত ২৭ অক্টোবর আবেদন জানানো হলে শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করলেন।