চাকরি পেতে ব্যর্থ, ফুল চাষে দিন বদল ছাত্রলীগ নেতা লিয়াকতের
চাকরির পেছনে ছুটে অনেকটা ব্যর্থ হয়েই ফুল চাষ শুরু করেন ফরিদপুর সদর উপজেলার আলীয়াবাদ ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত হোসেন। চাকরি না পাওয়ায় মনে কষ্ট থাকলেও ফুলচাষে সফলতা আসায় মুখে হাসি ফুটেছে তাঁর।
২০১৮ সালের শেষ দিকে মাত্র ৫২ শতাংশ জমিতে বড় ভাই আনোয়ার হোসেনের সহযোগিতায় ইউনিয়নের খুশির বাজার এলাকায় জারবেরা ফুলের চাষ শুরু করেন লিয়াকত। ২০১৯ সালে ব্যবসা ভালো হওয়ায় আরো ৭৫ শতাংশ জমি নিয়ে এখন মোট ১২৭ শতাংশ জমিতে ফুল চাষ করছেন তিনি।
লিয়াকত হোসেন জানান, জারবেরার পাশাপাশি চন্দ্রমল্লিকা ও জিপসি ফুলেরও চাষ করছেন তিনি। নতুন করে তিনি গোলাপের চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। তাঁকে দেখে এখন অনেকেই ফুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এখানকার ফুলচাষিদের টার্গেট এখন ফেব্রুয়ারি মাসকে ঘিরে। কারণ পহেলা ফাল্গুন, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। তাই এই মাসে ফুলের চাহিদাও বেশি থাকে।
এক সময়ে হতাশাগ্রস্ত লিয়াকত অনার্স ও এলএলবি শেষ করে চাকরির জন্য অনেক চেষ্টা করেন। কিন্তু ভাগ্যে তাঁর চাকরি জোটেনি। পরে বড় ভাইয়ের মাধ্যমে ঢাকার সাভারে গিয়ে ফুলচাষের কাজ শিখে ফরিদপুরে চলে আসেন। এরপর যশোর ও ভারত থেকে সাত হাজার জারবেরার ফুলের চারা সংগ্রহ করে চাষাবাদ শুরু করেন। এখন তাঁর বাগানে শুধু জারবেরাই নয় হাজার ছাড়িয়েছে।
২৫ লাখ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও এখন লিয়াকতের বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪০ লাখ টাকা। যা তিনি গত দেড় বছরের লাভ থেকে করেছেন। তাঁর বাগানের ফুল ফরিদপুর ও আশেপাশের জেলা ছাড়াও ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকাররা এসে নিয়ে যাচ্ছেন।
ফুলের বাগান দেখতে আসা রেজাউল করিম বিপুল বলেন, ‘আমার মতো অনেকেই বিকেলে এ এলাকায় আসে ফুল দেখতে। অনেকেই আবার পরিবারের জন্য ফুল কিনে নিয়ে যান।’
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় জেলায় কয়েকটি স্থানে ফুলের চাষ হচ্ছে। তবে যারা কৃষি বিভাগের সঙ্গে কম যোগাযোগ রাখছেন তাদের সবসময় সহযোগিতা করা সম্ভব হয় না।
কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, যাদের সমস্যা আছে যোগাযোগ করলে তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।