চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অন্তঃস্বত্তা, অভিযোগ শিক্ষক ও দুই প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে
বরিশালে চতুর্থ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর অন্তঃস্বত্তা হওয়ায় তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতিত শিশুর স্কুলের এক শিক্ষকসহ দুই প্রতিবেশী এ ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ নির্যাতিত শিশু ও তার মায়ের।
অপরিণত বয়সে অন্তঃস্বত্তা হওয়ায় ওই ছাত্রীর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মৃদুলা কর।
এদিকে এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।
গত মঙ্গলবার রাতে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ১২ বছর বয়সী ওই ছাত্রীকে শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রী জানায়, প্রায় ৯ মাস আগে স্কুলের এক শিক্ষক অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে প্রথম ধর্ষণ করে। এক নারী শিক্ষক এতে সহায়তা করেন। এ খবর স্থানীয়ভাবে লোকমুখে জানাজানি হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর দুই প্রতিবেশী খালি বাসায় ঢুকে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে।
এসব ঘটনার পর নির্যাতিতার মা প্রতিবাদ করে বিচার চাইলে তাঁকেও মারধর করার অভিযোগ ওঠে ধর্ষণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
এদিকে চিকিৎসক মৃদুলা কর জানান, পরীক্ষা নিরীক্ষার পরই শিশুটির শারীরিক অবস্থা জানা যাবে। তারা বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত টাকার অভাবে তার কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেনি। অপরিলত বয়সে অন্তঃস্বত্তা হওয়ায় ওই ছাত্রীর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট নির্যাতিতার মা বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে অভিযুক্ত শিক্ষক ও দুই প্রতিবেশীর নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়নি বলে জানায় নির্যাতিত শিশুটির মা।
সংবাদকর্মীরা এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে নির্যাতিত শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে যান বরিশালের পুলিশ সুপার। তিনি ওই শিশুর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন এবং এ ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন নির্যাতিত শিশুর মা। এ মামলায় জুয়েল হাওলাদার নামে এক প্রতিবেশী বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
নির্যাতিত ওই শিশু চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। তার মা ঝিয়ের কাজ করেন এবং বাবা শাক তুলে বাজারে বিক্রি করেন।