কুষ্টিয়ার এক গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ লোকের করোনা উপসর্গ!
ভারত সীমান্তবর্তী কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে করোনার সংক্রমণ। গ্রামটিতে গেল ২২ দিনে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখানকার ৮০ ভাগ মানুষ এখন ভোগছে করোনার উপসর্গে। এর পরও করোনা সম্পর্কে সচেতনতা বা ভয় নেই ওই গ্রামের মানুষের মধ্যে। মানছে না স্বাস্থ্যবিধিও।
সম্প্রতি গ্রামটি পরিদর্শন করেছেন উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সবাইকে দ্রুত করোনার নমুনা পরীক্ষার আওতায় আনার পাশাপাশি সংকট নিরসনে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম লক্ষ্মীপুর। করোনার প্রথম ঢেউয়ে এই গ্রামের কেউই আক্রান্ত হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে এলোমেলো হয়ে গেছে সব। করোনার ভয়াল থাবায় এরই মধ্যে প্রাণ গেছে ১২ জনের। লক্ষ্মীপুর গ্রামের ঘরে ঘরে এখন বেশিরভাগ মানুষই অসুস্থ। জ্বর-সর্দিসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে গ্রামের ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছে তারা। করোনার সব উপসর্গ থাকলেও শহর থেকে এই গ্রামটি অনেক দূরে হওয়ায় কেউই পরীক্ষা করাতে যায় না। করোনার ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন তারা।
লক্ষ্মীপুর গ্রামে চার হাজার মানুষের বসবাস। এখানে নেই কোনো কমিউনিটি ক্লিনিক। গত ৩ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত ২২ দিনে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে এ গ্রামে ১২ জনের মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নড়েচরে বসে প্রশাসন। সম্প্রতি গ্রামটি পরিদর্শন করেন উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন জানান, অসচেতনতার কারণেই সংক্রমণ বেড়েছে। আমরা এখানকার রোগীদের পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছি। এ গ্রামে বসবাসকারী সবাইকে দ্রুত করোনার নমুনা পরীক্ষার আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ মামুন জানান, সংকট নিরসনে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষকে ঘড়ে রাখতে গ্রামটিকে সার্বক্ষণিক পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন মাস্ক ও সচেতনাতার জন্য লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করছে। কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনসহ ঝুকিপূর্ণ এই গ্রামে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার ঘোষণাও দেন তারা।
জেলা সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের নজর এখন করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া এই লক্ষ্মীপুর গ্রামে। এখানকার মানুষের স্বাস্থ্যের নানা তথ্য সংগ্রহ করতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে তিনটি দল গঠন করা হয়েছে।