কাবাডি খেলোয়াড় থেকে কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক
কৃষিবিদ সমীর চন্দ এর আগে কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন ও বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য। এবার পুরো কৃষক লীগের নেতৃত্ব তাঁর হাতে। কৃষক লীগের নতুন সভাপতি হয়েছেন তিনি।
সমীরের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করবেন একজন নারী আইনজীবী। সংগঠনের জন্মের পর থেকে শীর্ষ দুই পদের একটিতে প্রথমবারের মতো একজন নারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আজ। তিনি হলেন উম্মে কুলসুম স্মৃতি। দশম জাতীয় সংসদে তিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ছিলেন। এর আগে কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কলেজজীবনে স্মৃতি কাবাডি খেলায় গাইবান্ধা জেলা চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন।
আজ বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ কৃষক লীগের দশম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন।
সমীর চন্দ
সমীর ১৯৮২-৮৩ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) কৃষি বিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৮৬ সালে (১৯৮৯ সালে অনুষ্ঠিত) বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ১৯৮৭-৮৯ মেয়াদে বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট (বর্তমানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং সেই সময় ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৯৯৬-৯৮ মেয়াদে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ঢাকা মেট্রোপলিটনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে কৃষিবিদদের চাকরির সংস্থানসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি।
সমীর চন্দ বাংলাদেশ কৃষক লীগের ১৯৯৮-২০০৭ মেয়াদে কৃষি উপকরণ সম্পাদক এবং ২০০৭-২০১২ মেয়াদে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি পেশাজীবী সংগঠন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের ২০০৯-২০১২ মেয়াদে সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২০১২-২০১৬ মেয়াদে যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
উম্মে কুলসুম স্মৃতি
দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সদস্য ও আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি ১৯৬৩ সালের ১ জানুয়ারি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার জামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মরহুম মোকসেদ আলী প্রধান মধু ও মায়ের নাম মরহুমা মাহমুদা বেগম প্রধান।
স্মৃতির স্বামী মো. মাহবুর রহমান একজন ব্যবসায়ী। ছাত্রজীবন থেকেই স্মৃতি ছাত্রলীগের রাজনীতে সক্রিয়। ছাত্রজীবন শেষে একজন আইনজীবী হিসেবে ১৯৯৩ সালে ঢাকা বারে যোগ দেন এবং আওয়ামী রাজনীতি তথা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত হন। ২০০০ সালে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সর্বাধিক ভোটে কার্যকরী পরিষদের এক নম্বর সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৬-০৭ সালের ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন, ২০০৩ সালে বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগ দেন সাধারণ সদস্য হিসেবে। এরপর আইন বিষয়ক সম্পাদক ও পরে ২০১২ সালে কাউন্সিল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমান সময়ে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গাইবান্ধা জেলা শাখার সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য। দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সংসদে তিনি কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারিয়ান অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সদস্য।
২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোট বিরোধী প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সংগঠনে, মিছিলে, রাজপথ অবরোধ কর্মসূচিতে স্মৃতি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। নিয়মিত আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন তিনি। ২০০১ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিম কোর্ট বারের) সদস্য পদ লাভ করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সময়ে তিনি এপিপি, এডিশনাল পিপি ও পিপি (দুর্নীতি দমন কমিশন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কলেজজীবনে ভালো কাবাডি খেলোয়াড় ছিলেন স্মৃতি। কাবাডিতে গাইবান্ধা জেলা চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন তিনি।