কলিমউল্লাহর বিষোদগার অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত : ইউজিসি
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও তদন্ত কমিটি নিয়ে ব্যক্তিগত বিষোধগার করেছেন তা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। উপাচার্যের মতো দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত একজন ব্যক্তির কাছ থেকে কোনোভাবেই এটি প্রত্যাশিত নয়।’
আজ শনিবার ইউজিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। বেরোবির উপাচার্য সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও ইউজিসিকে দোষারোপ করার দুদিনের মাথায় ইউজিসির পক্ষ থেকে এই বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এলো।
গত বৃহস্পতিবার অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা শিক্ষামন্ত্রীর আশ্রয় ও আশকারায় হয়েছে।’ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আজ ইউজিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুবিভাগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপিত হলে তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ইউজিসিকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অনিয়মের অভিযোগটি পরিকল্পনা সংক্রান্ত হওয়ায় ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য, পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালকের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পদমর্যাদা অনুসারে তাঁরা কমিটির আহবায়ক, সদস্য ও সদস্য সচিব হয়েছেন।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘তদন্ত কমিটি পেশাদার মনোভাব নিয়ে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ, সরেজমিনে পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত হয়ে একটি বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে। পরবর্তীতে কার্যার্থে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। তদন্তটি দীর্ঘ সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো পর্যায়ে মাননীয় শিক্ষমন্ত্রী বা অন্য কেউ প্রভাব বিস্তার করার কোনো ধরনের সুযোগ নেই। কমিশন দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চায় যে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত সম্পূর্ণ স্বাধীন ও প্রভাবমুক্তভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।’
দেশের উচ্চশিক্ষার বিস্তার, গুণগত ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ও গবেষণা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের দেখভাল, আর্থিক মঞ্জুরী ও গবেষণা সহায়তা দিয়ে আসছে। ইউজিসি সব সময় নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে কাজ করছে এবং কখনোই এর ব্যত্যয় ঘটেনি বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি কখনও কোনো বিষয়ে প্রভাব বিস্তারের বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেননি। কোনো উপাচার্য বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে এমন কোনো ধরনের পরামর্শ বা নির্দেশনা তিনি কখনোই প্রদান করেননি। বরং তিনি বিভিন্ন সভা-সেমিনারে গুণগত ও মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, ও দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব দিয়েছেন। ইউজিসি জাতির পিতার হাতে গড়া একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে কমিশন সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। সকলকে এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।’